আল্লাহ তাআলা কোথায় আছেন? আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকিদা


আল্লাহ তাআলা কোথায় আছেন? এটি কুরআনের একটি মুতাশাবিহাত তথা রূপক শব্দের অন্তর্ভূক্ত। তাই আমাদের পূর্ববর্তী মুহাক্কিকগণ এটির ব্যাপারে অতি গবেষণা থেকে নিজেদের বিরত রেখেছেন।



কিন্তু যাদের মনে কূটিলতা আছে তারা ফিতনা বিস্তারের জন্য এসবকেই প্রচারণার মূল টার্গেট বানিয়ে কাজ করে যায়।



সেই কূটিল সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত প্রচলিত বিদআতি ফিরক্বা কথিত আহলে হাদীস। যাদের কাজই হল মুতাশাবিহ এবং মতভেদপূর্ণ বিষয়কে মানুষের সামনে তুলে ধরে ফিতনা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা।



যাই হোক, আমি সংক্ষেপে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মতামত তুলে ধরছি ৷



১. ইমাম আবু হানিফা রহ.-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, আল্লাহ কোথায়? তিনি বললেন :


كان الله تعالى ولا مكان، كان قبل أن يخلق الخلق، كان ولم يكن أين ولا خلق ولا شىء، وهو خالق كل شىء


অর্থাৎ যখন কোনো স্থানই ছিল না, তখনো আল্লাহ ছিলেন। সৃষ্টির অস্তিত্বের পূর্বে তিনি ছিলেন। তিনি তখনো ছিলেন, যখন ‘কোথায়’ বলার মতো জায়গা ছিল না, কোনো সৃষ্টি ছিল না এবং কোনো বস্তুই ছিল না। তিনিই সবকিছুর স্রষ্টা।[ আল-ফিকহুল আবসাত : ৫৭ ]  



২. ইমাম আবু হানিফা রহ. আরও বলেন :


نقر بأن الله على العرش استوى من غير أن يكون له حاجة إليه واستقرار عليه وهو الحافظ للعرش وغير العرش، فلو كان محتاجا لما قدر على إيجاد العالم وتدبيره كالمخلوق ولو كان محتاجا إلى الجلوس والقرار فقبل خلق العرش أين كان الله تعالى! تعالى الله عن ذلك علوا كبيرا.


আমরা স্বীকার করি যে, আল্লাহ তাআলা আরশের ওপর ইসতিওয়া করেছেন। তিনি আরশের প্রতি কোনো ধরনের প্রয়োজন ও তার ওপর স্থিতিগ্রহণ ব্যতিরেকেই তার ওপর ইসতিওয়া করেছেন।


তিনি আরশ ও আরশ ছাড়া অন্য সব সৃষ্টির সংরক্ষণকারী কোনো ধরনের মুখাপেক্ষিতা ব্যতিরেকে। তিনি যদি মুখাপেক্ষী হতেন, তাহলে সৃষ্টিজীবের মতো মহাবিশ্ব সৃষ্টি ও পরিচালনা করতে সক্ষম হতেন না। 




তিনি যদি আরশের ওপর সমাসীন হওয়া এবং স্থির হওয়ার দিকে মুখাপেক্ষী হতেন, তাহলে আরশ সৃষ্টির পূর্বে তিনি কোথায় ছিলেন? আল্লাহ এসব বিষয় থেকে সম্পূর্ণ ঊর্ধ্বে।[ আল-ওসিয়্যাহ : ২ ]  



৩. ইমাম ইবনু আবদুস সালাম রহ. 


ইমাম আবু হানিফা থেকে উদ্ধৃত করেন :


من قال لا أعرف الله تعالى في السماء هو أم في الأرض كفر، لأن هذا القول يوهم أن للحق مكانا ومن توهم أن للحق مكانا فهو مشبه


অর্থাৎ যে ব্যক্তি বলবে, আমি জানি না, আল্লাহ তাআলা আকাশে আছেন নাকি পৃথিবীতে, সে কাফির হয়ে যাবে। কারণ, এই কথাটি এ সংশয় সৃষ্টি করে যে, আল্লাহ তাআলার জন্য কোনো স্থান রয়েছে। যে ব্যক্তি এ ধারণা রাখবে যে, আল্লাহ জন্য কোনো স্থান রয়েছে, সে একজন মুশাব্বিহা।

[ শারহুল ফিকহিল আকবার, মোল্লা আলি কারি ]  


হযরত ইমাম মালিক রহঃ বলেন,


الاستواء معلوم والكيفية مجهولة، والسؤال عنه بدعة، والايمان به واجب،


“আল্লাহ  তাআলার আরশে ইস্তিওয়া এর বিষয়টি জানা যায়, কিন্তু অবস্থা অজানা। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা বিদআত। আর এ বিষয়ে ঈমান রাখা ওয়াজিব”।


আল্লাহ তায়ালা আমাদের আকিদা সঠিক করার তাওফিক দান করুন ৷৷

সত্য প্রকাশ

আমার নামঃ মুফতি রেজাউল করিম। আমি একটি কওমী মাদরাসায় শিক্ষকতা করছি। পাশাপাশি এ ব্লগের সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। অনলাইন সম্পর্কে মোটামুটি জ্ঞান থাকায় সময় পেলে দ্বীন ইসলাম নিয়ে কিছু লেখার চেষ্টা করি। যেন অনলাইনেও মানুষ ইসলামি জ্ঞান অর্জন করতে পারে। আপনিও চাইলে এ ব্লগে লিখতে পারেন। মোবাইলঃ 01782-40 91 69

Please Select Embedded Mode For Blogger Comments

নবীনতর পূর্বতন