টিকটক ভিডিও : যুব সমাজ কে বাঁচাতে অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে
সময় নিউজ অনলাইন পত্রিকায় চোখ বুলিয়ে দেখলাম "বিতর্কিত টিকটকার অপু ভাই ও মামুনসহ কয়েকজনের আইডি ব্যান করা হচ্ছে।"
কারণ দর্শানো হয়েছে,
১৷ মারামারি ও হিংসাত্মক বিষয়ে তরুণ সমাজকে বিপথে নেয়ার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়ে ‘সাইবার-৭১’।
২৷ রোববার উত্তরা পূর্ব থানাধীন ৬ নম্বর সেক্টরের আলাউল এভিনিউ এলাকায় সড়কে এক ব্যক্তিকে মারধর করেন অপু। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সোমবার সন্ধ্যায় আলাউল এভিনিউ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
৩৷ সামাজিকমাধ্যমে নতুন ‘গ্যাং কালচার’ তৈরি অভিযোগ রয়েছে অপু ও মামুনসহ একাধিক টিকটকারের বিরুদ্ধে।
কারণ যাই হোক, অপু আর মামুনের মত অনেক যুবক আছে টিকটক সেলিব্রিটি৷ তারা টিকটকের মাধ্যমে অসামাজিক কার্যকলাপসহ যুবক যুবতিদের চরিত্র হরন করে চলছে প্রতিনিয়ত৷ সমাজে ছড়াচ্ছে নোংরা অশ্লিলতা৷ শুধু তাই নয় সোসাইটিতে পর্নোগ্রাফি ছড়ানোর অভিযোগেও রয়েছে অ্যাপটির বিরুদ্ধে৷
তাই, অপু আর মামুনকে গ্রেফতার করলে অবস্থা পরিবর্তন হবে না৷ বন্ধ হবে না অশ্লিলতা আর টিকটকারদের উলঙ্গপনা আর বেহায়াপনা৷ বরং বাংলাদেশ থেকে অ্যাপটিকে বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ৷
যারা অনলাইনে মোটামুটি অ্যাকটিভ থাকেন৷ তারা হয়তো দেখে থাকবেন৷ বিভিন্ন দেশে এ অ্যাপটিকে বন্ধ করে দিয়েছে৷ আবার কোনো কোনো দেশে টিকটকের ভিডিওর কারণে কারাদণ্ডও দিয়েছেন অনেক কে৷
সারাবিশ্বে মোট ২০০ কোটিবার ডাউনলোড করা হয়েছে টিকটক অ্যাপটি৷ গত বছর পর্নোগ্রাফি ছড়ানোর অভিযোগে ভারতের একটি আদালত সেখানে অ্যাপটি কিছুদিনের জন্য নিষিদ্ধ করে৷ পরে চীনের সাথে রাজনৈতিক বিরোধের পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয় টিকটকসহ আরো বেশ কয়েকটি চীনা অ্যাপ৷
আরো পড়ুন: বিতর নামায আদায়ের পদ্ধতি
একটি তালিকা দেখুন,
১৷ মিশরে ছয় নারীর কারাদণ্ড দিয়েছে, টিকটক ভিডিওর কারণে
"টিকটকে ভিডিও শেয়ার করার কারণে ছয় নারীকে ভিন্ন ভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে মিশরের আদালত৷ তাদের বিরুদ্ধে আসল অভিযোগ, পারিবারিক মূল্যবোধ লঙ্ঘন, মানবপাচার উৎসাহিত করা ও লাম্পট্য৷"
আমার কথা হলো, আমাদের দেশের টিকটকাররা কি সামাজিক মূল্যবোধ লঙ্ঘন করছে না? লাম্পট্যতা ছড়াচ্ছে না? উত্তর আসবে অবশ্যই সামাজিক মূল্যবোধে আঘাত হানছে৷ যুবক ছেলেদেরকে লম্পট বানাচ্ছে৷ তাহলে কেন এ টিকটক অ্যাপ বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হবে না?
মিশরের রাজধানী কায়রোর আদালতে ছয় নারীর মধ্যে দুজনের দু বছরের কারাদণ্ড ও ১৬ হাজার ইউরো জরিমানা করেছে৷ তিন জনের শুধু দু বছরের কারাদণ্ড এবং আরেকজনের তিন বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা হয়েছে৷
রায়ে ওই ছয় নারীর বিরুদ্ধে ‘অশোভনভাবে নাচা', ‘মিশরের পারিবারিক মূল্যবোধ ও নীতি লঙ্ঘন করা', লাম্পট্য এবং মানবপাচার উৎসাহিত করার অভিযোগের উল্লেখ করা হয়৷
তারা হলেন হানিন হোসাম এবং মাওয়াদা এলাদহাম৷ দু'জনই ছাত্রী৷ হানিনের বয়স ২০ এবং মাওয়াদার বয়স ২২ বছর৷
উল্লেখ করা হয়েছে, হানিন, মাওয়াদা এবং বাবি চার নারী কখনো স্পোর্টস কারের ভেতরে বসে টিকটকের জন্য খুব ছোট ভিডিও ক্রিয়েট করতেন৷ কখনো স্পোর্টস কারের বাইরে দাঁড়িয়ে নাচতেন৷ কখনো কখনো রান্নাঘর বা অন্য কোনো জায়গা থেকে আপাত নিরীহ সব কৌতুক করতেও দেখা যেতো তাদের৷
২৷ টিকটক কে পাকিস্তানের চূড়ান্ত সতর্কবার্তা
অনৈতিক কন্টেন্ট' ছড়ানোর দায়ে শেষবারের মতো ভিডিও-অ্যাপ 'টিকটক'কে সতর্ক করল পাকিস্তান৷ একই অভিযোগে আরেকটি অ্যাপকে ব্লক করা হয়েছে সেখানে৷
অ্যাপব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা ও অন্যান্য বিষয়ের একাধিক সমস্যার কারণে এর আগে অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ থেকেও উঠে এসেছে ‘টিকটক'-বিরোধী পদক্ষেপ৷
কিন্তু পাকিস্তানের টেলিকমিউনিকেশন অথরিটি পিটিএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, ‘অনৈতিক' কন্টেন্ট প্রচারের কারণে তারা টিকটককে সতর্ক করছে৷ পাশাপাশি, আরেকটি অ্যাপ ‘বিগো লাইভ'কে ব্লক করার কথাও জানায় তারা৷
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘অশ্লীল ও অনৈতিক কন্টেন্টের প্রচার থামাতে অবিলম্বে জোরদার পদক্ষেপ নিতে হবে টিকটককে৷ এটাই টিকটকের উদ্দেশ্যে পিটিএ'র চূড়ান্ত সতর্কবার্তা৷ একই কারণে বিগো অ্যাপ ব্লক করছি আমরা৷’’
৩৷ ভারতে নিষিদ্ধ ৫৯ চীনা অ্যাপ
চীনের ৫৯টি অ্যাপ আর ভারতে ব্যবহার করা যাবে না। এই তালিকায় আছে টিকটক, ইউসি ব্রাউজার, শেয়ারইট, ক্যামস্ক্যানার, উইচ্যাট, ক্ল্যাশ অফ কিংস, ডিইউ ব্যাটারি সেভার, এমআই কমিউনিটি, ক্লাবফ্যাক্টরি, এমআই ভিডিও কল ইত্যাদি।
ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাইবার ক্রাইম বিভাগের তরফ থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট তাঁদের কাছে এসেছে। অ্যাপ ব্যবাহারকারীরাও তাঁদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। সব কিছু খতিয়ে দেখে দেশের স্বার্থ ও ১৩০ কোটি লোকের তথ্য ও গোপনীয়তার অধিকার সুরক্ষিত রাখতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, অভিযোগ হলো, এই সব অ্যাপের মাধ্যমে নানা তথ্য চীনের কাছে চলে যাচ্ছিল।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভারত এই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় চীনা কোম্পানিগুলির ক্ষতি হবে। ভারতে ১০ কোটি লোকের কাছে টিকটক অ্যাপ ছিল। এমনকী সরকারও টিকটক অ্যাপ ব্যবহার করত। তাদের ১১ লাখ ফলোয়ার ছিল। তবে সেই টিকটক অ্যাপ মুছে ফেলা হয়েছে। অন্য অ্যাপগুলিও কমবেশি জনপ্রিয় ছিল। এখন অন্য দেশও যদি ভারতের মতো এই সব অ্যাপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়, তা হলে চীনা কোম্পানিগুলি বিপাকে পড়বে।
টিকটকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁরা সরকারি প্যানেলের কাছে গিয়ে তাঁদের মতামত জানাবে। গোপনীয়তার অধিকার বজায় রাখার জন্য তাঁরা বদ্ধপরিকর। এ জন্য ভবিষ্যতে যা করার তাঁরা করবে।
সুতরাং অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশে টিকটক অ্যাপ বন্ধ করা সময়ের দাবী৷ তা না হলে বেলা শেষে পস্তাতে হবে৷ পথ হারাবে যুব সমাজ৷ চরিত্রহীন হবে এ দেশের সহজ সরল মেয়েগুলো৷ আজ এ পর্যন্তই৷ ( সম্পাদক )