প্রিয় ভিজিটর! বর্তমান সময়ে নামাজের ভেতর বিশেষ করে তারাবিহের নামাজে কোরআন শরীফ দেখে দেখে পড়ার প্রতি মানুষ বেশি ঝুঁকে যাচ্ছে এবং অনেক স্কলারগণ এটাকে ঢালাও ভাবে জায়েয বলে ফতাওয়াও দিচ্ছেন। আজ আমি বিষয়টি সংক্ষেপে আলোচনা করার চেষ্টা করবো।ইনশাআল্লাহ।
নবিজির মত নামাজ পড়তে হলে, নামাজে কোরআন দেখে দেখে পড়া যাবে না।
নবিজি সঃ বলেছেন-
قال النبي صلي الله عليه وسلم صلُّوا كما رَأَيْتُمُونِي أُصَلِّي
অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, তোমরা সেভাবেই নামায পড় যেভাবে আমাকে নামায পড়তে দেখেছো। (বুখারী হাদিস-৭২৪৬)
প্রিয় পাঠক!
ইসলামের শুরু যুগে যে সময় নামাজে কথা বলাও জায়েয ছিলো, এতদ্বসত্ত্বেও নবিজির সঃ পুরো জিন্দেগীতে নিজেও কোনদিন কোরআন দেখে নামাজ পড়েননি,পড়তে বলেননি এমনকি সাহাবারাও উনার উপস্থিতি পড়েছেন, এমন কোন ইতিহাসও নেই। সুতরাং নবিজির মত নামাজ পড়তে হলে কোরআন দেখে দেখে পড়ার কোন সুযোগ নেই। উপরন্তু কোন সাহাবী কোরআনের আয়াত মুখস্ত না থাকলে তাকে বিভিন্ন তাসবিহ পড়তে বলেছেন। তথাপিও কোরআন দেখে পড়ার অনুমতি দেননি। (হাদিসটি সামনে আসবে)।
নামাজে কোরআন শরীফ দেখে পড়া সাহাবায়ে কেরামের পছন্দনীয় ছিলো না।
এ ক্ষেত্রে ৪ জন সাহাবার মতামত তুলে ধরছি।যথা-
১. হযরত ওমর রা:
২. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা:
৩. হযরত আম্মার বিন ইয়াসির রা:
৪. হযরত সুয়াইদ ইবনে হানযালা রা:
যেমন-
عن ابن عباس رضي الله عنه قال نهانا امير المومنين عمر ان يوم الناس في المصحف
অর্থাৎ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, ” আমিরুল মুমিনীন উমর ইবনুল খাত্তাব রা. আমদেরকে কুরআন দেখে দেখে ইমামতি করতে নিষেধ করেছেন এবং আরো নিষেধ করেছেন যেন, বালেগ না হয়ে ইমামতি না করে।” ( ইলাউস সুনান হাদিস-১৪১৭ আল বিনায়াহ ফি শরহীল হিদায়াহ খঃ২ পৃঃ৫০৪ মাসাহিফ পৃঃ ১৮৯)
হযরত আম্মার বিন ইয়াসির রা:
খতীবে বাগদাদী রঃ তার ইতিহাস গ্রন্থ ‘তারীখে বাগদাদে হাদিস নিয়ে এসেছেন-عن عمار بن ياسر كان يكره ان يؤم الرجل الناس باليل في شهر رمضان في المصحف هو من فعل اهل الكتاب
অর্থাৎ হযরত আম্মার ইবন ইয়াসার রাঃ এর আছর বর্ণনা করেন যে, তিনি এই বিষয়টা অপছন্দ করতেন যে, কোন ব্যক্তি রমজান মাসে তারাবীহ পড়াবে আর কুর’আন দেখে দেখে পড়বে। কেননা এটি আহলে কিতাবের আমল। ( তারীখে বাগদাদ খঃ ৯ পৃঃ১৩০)খতিবে বাগদাদি রঃ আরো একটি হাদিস এনেছেন,
عن عمار بن ياسر انه كان يكره ان يؤم الرجل الناس بالليل في شهر رمضان في المصحف قال هو من فعل اهل الكتاب
অর্থাৎ হযরত আম্মার বিন ইয়াসির রাযি. রমজানের রাতের নামাজে কুরআন দেখে ইমামতি করাকে তিনি মাকরুহ মনে করতেন এবং বলতেন এটা আহলে কিতাবদের (ইহুদী-খৃষ্টনদের) কাজ। (তারিখে বাগদাদ খ: ৯ পৃ:১৩০)
হযরত সুয়াইদ বিন হানযালা রা:
عن عياش العامري عن سويد بن حنظلة رضي الله عنه أنه مر بقوم يؤمهم رجل في المصحف فكره ذلك في رمضان ونحا المصحف
অর্থঃ সাহাবী সাইয়েদুনা সুয়াইদ ইবনে হানজালা রাঃ এক গোত্রের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। যাদেরকে এক লোক কুর’আন শরীফ দেখে দেখে নামায পড়াচ্ছিলেন। এটা তিনি অপছন্দ করলেন এবং মাসহাফকে দূরে সরিয়ে দিলেন। এটা রমজান মাসের ঘটনা ছিল। ( মাসাহিফ হাদিস-৬৬৯)
পাঠক! উপরোক্ত হাদিস তিনটি থেকে আমরা সুস্পষ্টভাবে বুঝতে পারলাম নামাজে কোরআন শরীফ দেখে দেখে পড়া সাহাবায়ে কেরামের মতে অপছন্দনীয় ছিলো।
নামাজে কোরআন শরীফ দেখে পড়া তাবেয়ীদের কাছেও মারাত্মক অপছন্দনীয় ছিল।এখানে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন তাবেয়ীর মতামত তুলে ধরলাম। বিশেষ করে ইসলামী ইতিহাসে যেসব তাবেয়ীদের নাম গুরুত্বসহকারে উল্লেখ্য করা হয়,তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন-
১. হযরত রাবী বিন খুসাইম র: এর মতামত
حدثنا ابو جعفر عن الربيع قال كانوا يكرهون ان يؤم احد في المصحف
অর্থ: হযরত আবু জাফর র: রাবী বিন খুসাইম র: থেকে বর্ণনা করেন যে, তাঁরা (সাহাবায়ে কেরাম রাঃ) নামাজে কুরআন দেখে ইমামতি করাকে মাকরুহ মনে করতেন। (মাসাহিফ-৭৯০)
২. বিখ্যাত তাবেয়ি সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিব র: এর মত
عن قتادة عن ابن المسيب قال اذا كان معه ما يقوم به ليله ردده ولا يقرأ في المصحف
অর্থাৎ হযরত কাতাদা র: হযরত সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিব র: থেকে বর্ণনা করেন,’কারো যদি কিয়ামুল লাইলে পড়ার মতো সামান্য কুরআন মুখস্থ থাকে, তাহলে সেটা বারবার পড়বে৷ তারপরও কুরআন দেখে পড়বে না৷ ( মাসাহিফ-৭৭৩)
৩. বিখ্যাত তাবেয়ী হাসান বসরী র: এর মত
عن قتادة عن الحسن انه كره ان يؤم الرجل في المصحف
অর্থাৎ হযরত কাতাদা র: হযরত হাসান বসরী র: থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি নামাজে কুরআন দেখে ইমামতি করাকে অপছন্দ (মাকরুহ) মনে করতেন।(মাসাহিফ-৭৮৯)
৪. বিখ্যাত তাবেয়ী হযরত মুজাহিদ র: এর মত
عن ليث عن مجاهد انه كره ان يؤم الرجل في المصحف
অর্থাৎ হযরত লাইস র: হযরত মুজাহিদ র: থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি নামাজে কুরআন দেখে ইমামতি করাকে মাকরুহ মনে করতেন। (মাসাহিফ-৭৭৭)
৫. বিখ্যাত তাবেয়ী হযরত ইবরাহীম নাখায়ী র: এর মত
عن الاعمش عن ابراهيم انه كره ان يؤم في المصحف
অর্থাৎ হযরত আ’মাশ র: হযরত ইবরাহীম নাখায়ী র: থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি নামাজে কুরআন দেখে ইমামতি করাকে মাকরুহ মনে করতেন৷ (মাসাহিফ-৭৮০)
৬. বিখ্যাত তাবেয়ী হযরত আবু আব্দির রহমান সুলামী র: এর মত
عن عطاء بن السائب عن ابي هبد الرحمن السلمي انه كره ان يؤم في المصحف
অর্থ: হযরত আতা বিন সায়েব র: হযরত আবু আব্দির রহমান আস সুলামী র: থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি নামাজে কুরআন দেখে ইমামতি করাকে মাকরুহ মনে করতেন। (মাসাহিফ-৭৮৮)হযরত যাকওয়ান র: এর আমল ও জবাব
প্রিয় পাঠক! যারা বলে থাকেন ‘নামাজে কোরআন দেখে পড়া জায়েয’ তারা দলীল হিসাবে বিশিষ্ট তাবেয়ী, আম্মাজান আয়েশা রা: এর গোলাম যাকওয়ান র: এর একটি আমল উল্লেখ্য করে থাকেন। যা বুখারী শরীফে باب إمامة العبد والمولى এ তালীকান উল্লেখ করা হয়েছে।
وكانت عائشة يؤمها عبدها ذكوان من المصحف
অর্থাৎ হযরত আয়েশা রা. এর গোলাম তার তারাবীহের নামাজ পড়াতেন মুসহাফ থেকে দেখে দেখে।”
প্রিয় পাঠক! এখানে দুটি বিষয় না বললেই নয়।
১. ইমাম বুখারী র: যাকওয়ান র: এর হাদিসটি বুখারী শরীফের মূল হাদিস হিসাবে বর্ণনা করেননি।।বরং শিরোনামের সম্পূরক হিসাবে এনেছেন।
২. তিনি হাদিসটির মাধ্যমে ‘ নামাজে কোরআন দেখে পড়া যাবে’ এ কথা প্রমাণ করার জন্য আনেননি।বরং গোলামের পেছনে নামাজ পড়া জায়েয’ এ কথা প্রমাণ করার জন্য এনেছেন। তারপরও হাদিসটির দিকে একটু গভীর নজর দিলে বেশ কয়েকটি বিষয় আমাদের কাছে স্পষ্ট হবে। চলুন হাদিসের ব্যাখ্যাদাতাগণ কি বলেছেন দেখে নেয়া যাক।
১. যাকওয়ান র: নামাজে কোরআন দেখে পড়তেন না।
হাদিসটি আরেকটু তালাশ করলে যাকওয়ান র: এর কোরআন পড়ার ব্যাপারে ভিন্ন অর্থ হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। যেমন-
বুখারী শরীফের রেওয়ায়েতে বলা হয়েছে,
وكانت عائشة يؤمها عبدها ذكوان من المصحف
অর্থাৎ হযরত আয়েশা রা. এর গোলাম তার তারাবীহের নামাজ পড়াতেন মুসহাফ থেকে দেখে দেখে।
এই হাদিসটি আবার মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাতে উল্লেখ্য করা হয়েছে এভাবে,
کَانَ یَوٴُمُّ عَائِشَةَ عَبْدٌ یَقْرَأُ فِي الْمُصْحَفِ
অর্থাৎ আয়েশা রা: এর ইমামতি করতেন এক গোলাম, যিনি মুসহাফে দেখে কুরআন পড়তেন। সূত্র: মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা হাদীস- ৭২৮৬
মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বার এ হাদিস দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, তিনি নামাজে নয় বরং অন্য সময় দেখে দেখে কোরআন পড়তেন। আর এজন্যই ইমাম কাসানী র: বলেন,
يحتمل أن يكون قول الراوي كان يؤم الناس في رمضان وكان يقرأ من المصحف اخبارا عن حالتين مختلفتين أي كان يؤم الناس في رمضان وكان يقرأ من المصحف في غير حالة الصلاة
অর্থাৎ রাবীর কথায় এই সম্ভাবনাও বিদ্যমান যে, যাকওয়ান র: রমাযানে ইমামতি করতেন এবং বাকি অন্যসময় মুসহাফে দেখে দেখে কুর’আন পড়তেন। বিচ্ছিন্ন দুটি অবস্থার কথা বলা হয়েছে।অর্থাৎ রমাযানে লোকদের ইমামতি করতেন,আর নামাজের বাহিরে অন্য সময় কোরআন দেখে দেখে পড়তেন।
(বাদায়িউস সানায়ে খঃ২ পৃঃ১৩৩)
উপরন্তু প্রশিদ্ধগ্রন্থ ‘আল মাবসুত’ এ বলা হয়েছে,
وليس المراد بحديث ذكوانانه كان يقرأمن المصحف في الصلاة انما المراد بيان حاله انه كان لا يقرأ جميع القرأن عن ظهر القلب والمقصود بيان ان قراءة جميع القرآن في قيام رمضان ليس بفرض
অর্থাৎ যাকওয়ান র: এর হাদিসের উদ্দেশ্য এটা নয় যে, তিনি নামাজে কোরআন দেখে দেখে পড়তেন। বরং উদ্দেশ্য হলো, তার এ অবস্থা বর্ণনা করা যে, তিনি পুরো কোরআন মুখস্ত পড়তে পারতেন না এবং এ কথা বর্ণনা করা উদ্দেশ্য যে, তারাবিহতে কোরআন খতম করা ফরজ নয়।
( আল মাবসুত খ:১ পৃ:২০২)
আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী রাহ. বলেন,
اثر ذكوان ان صح فهو محمول علي انه كان يقرأ من المصحف قبل شروعه في الصلاة اي ينظر فيه ويتلقن منه ثم يقوم فيصلي وقيل ما دل فانه كان يفعل بين كل شفتين فيحفظ مقدار ما يقرأ من الركعتين فظن الراوي انه كان يقرأ من المصحف
অর্থাৎ যাকওয়ান র: এর হাদীসের দ্বারা উদ্দেশ্যে হল, যাকওয়ান নামায শুরু করার পূর্বে কুর’আন দেখে আত্মস্থ করে নিতেন এবং নামাযে গিয়ে তা তিলাওয়াত করতেন। তিনি প্রতি দুই রাকাতে কী তিলাওয়াত করবেন তা নামাযের আগে মুসহাফ খুলে পোক্তা ইয়াদ করে নিতেন। রাবী এটাকেই বর্ণনার করতে গিয়ে বলেছেন যে, কুর’আন দেখে তিলাওয়াত করতেন।
( আল বিনায়া খ:২ পৃ:৫০৪)
প্রিয় পাঠক! উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা এতটুকু স্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছেন যে, যাকওয়ান র: নামাজে কোরআন শরীফ দেখে পড়তেন না। আর এ কথাটাই যুক্তিযুক্ত। কারণ কোরআন শরীফ আমাদের সামনে যেভাবে রয়েছে ‘৩০ পারা এক সাথে কাগজের ভেতর ‘ এভাবে সে যুগে ছিল না। সে যুগে তো কোরআন শরীফ গাছের পাতা, চাড়ায় ইত্যাদীতে লেখা থাকতো।উপরন্তু হযরত উসমান রা: কোরআন একত্রিত করে এক সাথে যে করেছিলেন, সেটা এত ভারি ছিল যে, যেকোন একজন মানুষের পক্ষে হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া সম্ভব নয়।সুতরাং বুঝা গেল হযরত যাকওয়ান র: হাতে নিয়ে কোরআন দেখে নামাজ পড়তেন না।বরং নামাজের বাহিরে দেখে দেখে পড়তেন।
এরপরও যদি ধরে নিই যে, তিনি নামাজেই দেখে দেখে কোরআন পড়তেন, তাহলে সে ক্ষেত্রে আরেকটি কথা ভাবতে হবে যে, আয়েশা রা: বিষয়টি জানতেন কি না?
২. হযরত আয়েশা রা: যাকওয়ান র: এর এ বিষয়টি সম্পর্কে জানতেন না।
কারণ কাতারে মহিলাদের দাঁড়ানোর স্থান হলো পুরুষদের কাতারের পেছনে। উপরন্তু আম্মাজান আয়েশা রা: নামাজে এদিক-সেদিক তাকাবেন এটা ভাবাও যায় না। ফলে তিনি কাতারে পুরুষদের পেছন থেকে ইমাম কি করছেন সেটা দেখতে পেয়েছেন কি না বিষয়টি যথেষ্ট ভাবনার।
এজন্য আল্লামা কাসানী রহ. লেখেন,
وأما حديث ذكوان فيحتمل ان عائشة ومن كان من أهل الفتوى من الصحابة لم يعلموا بذلك وهذا هو الظاهر بدليل ان هذا الصنيع مكروه بلا خلاف ولو علموا بذلك لما مكنوه من عمل المكروه في جميع شهر رمضان من غير حاجة
অর্থাৎ এটাও সম্ভব যে, যাকওয়ানের কুর’আন দেখে পড়ার বিষয়ে আয়েশা সিদ্দীকা রা. ও ফকীহ সাহাবায়ে কেরাম জানতেন না। কেননা নামাযে দেখে কুর’আন পড়া তৎকালীন সময়েও সবার ঐক্যমতে মাকরুহ ছিল। যদি তারা জানতেন তবে বিনা কারণে পুরো মাস এই মাকরুহ কাজে লিপ্ত থাকার সুযোগ দিতেন না।
( বাদায়িউস সানায়ে খঃ২ পৃঃ১৩৩)
বুঝা গেল আম্মাজান আয়েশা রা: এবং ফকীহ সাহাবাগণ বিষয়টি সম্পর্কে জানলে অবশ্যই নিষেধ করে দিতেন।
৩. কোন ওযরের কারণে হয়তো তিনি নামাজে কোরআন দেখে পড়েছেন।
এরপরও যদি ধরে নিই যে, বিনা ওযরেই পড়েছেন এবং আম্মাজান আয়েশা রা: বিষয়টি জানতেন, তাহলে সেক্ষেত্রে লা-মাযহাবী শায়খ আলবানী মরহুমের কথাটি লক্ষণীয়।
৪. হযরত যাকওয়ান র: বিষয়টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা।
শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানী বলেন,
لا نري ذلك وما ذكر عن ذكوان حادثة عين لا عموم لها وباباحة ذلك لأمة المساجد يؤدي بهم الى ترك تعاهد القران والعناية بحفظه غيبا
অর্থাৎ যাকওয়ানের ইমামতির ঘটনা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এর উপর ভিত্তি করে ব্যাপকভাবে অনুমতি দেওয়া যায় না। যদি মসজিদের ইমামদেরকে অনুমতি দেয়া হয় তবে কুর’আন হিফজ বা সংরক্ষণের যাবতীয় কার্যক্রম আস্তে আস্তে নিষ্প্রভ হয়ে যাবে। সূত্র: ফাতহুর রাহমান পৃ: ১২৪-১২৫সুতরাং সায়্যিদিনা যাকওয়ান র: এর এ ঘটনা,যেটা বিভিন্ন ব্যাখ্যা হওয়ার সুযোগ রয়েছে, সেটা দিয়ে ‘নামাজে কোরআন দেখে পড়া জায়েয’ বলার কোন সুযোগ নেই। উপরন্তু মনে রাখতে হবে খলীফা হযরত ওমর রা: সহ সাহাবায়ে কেরাম যেটা অপছন্দ করতেন, বড় বড় তাবেয়ীগণ যেটা মাকরুহ বলেছেন, ফকীহগণ যেটা শুধু “হালতে ইজতেরার” অনোন্যপায় অবস্থা কে শর্তযুক্ত করেছেন। উপরন্তু নামাজ ভঙ্গের দুটি কারণ থাকা সত্ত্বেও নামাজে কোরআন দেখে পড়া জায়েয যারা বলছেন দয়া করে এবার থামুন। মানুষকে আর বিভ্রান্ত করবেন না।