শিক্ষকের সোহবত ও সান্নিধ্য ব্যতীত যোগ্যতা সম্পন্য আলেম হওয়া যায় না। মুজতাহিদ ইমামের অনুসরণ ছাড়া সঠিক পদ্ধতিতে হাদিসের উপর আমল করা যায় না। অাল্লাহ তায়ালা এ ধরার মানুষের হেদায়েতের জন্য, সঠিক পথের দিশা দেওয়ার জন্য যুগে যুগে নবী রাসূল প্রেরণ করেছেন। কিন্তু তাদের প্রত্যেকের উপর কিতাব নাযিল করেননি। কারো উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন কারো উপর করেননি। তবে সমস্থ নবীগণ তাদের দায়ীত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন। মতান্তরে আম্বিয়য়ে কেরামের সংখ্যা এক লক্ষ বা দু‘লক্ষ চব্বিশ হাজার। আর সর্বমোট আসমানী কিতাবের সংখ্যা একশত চার খানা। নবী রাসূল গণের সংখ্যা আর কিতাবের সংখ্যা থেকে এ কথা স্পষ্ট বুঝা যায় যে, ইলম অর্জনের জন্য কিতাব এর তুলনায় রিজাল ( ব্যক্তি) এর প্রয়োজন বেশী। এ কারণে দেখা যায় , আল্লাহ তায়ালা কিতাবের তুলনায় রিজাল বেশী প্রেরণ করেছেন। এমন কখনো হয়নি যে, আল্লাহ তায়ালা রিজাল ব্যতিত শুধু কিতাব প্রেরণ করেছেন। এর দ্বারা বুঝা যায়, শিক্ষক ছাড়া শুধু কিতাব পড়ে এসতেদাদ সম্পন্য আলেম হওয়া যায় না। অনুরূপভাবে কোনো ফক্বীহর অনুসরণ ছাড়া সঠিক পদ্ধতিতে হাদিসের উপর আমল করা যায় না।
তাই তো কেউ কোনো বিধান না জানলে আল্লাহ তায়ালা اهل الذكر তথা জ্ঞানীদের নিকট জিজ্ঞাস করতে বলেছেন। এরশাদ হচ্ছে, فاسؤلوا اهل الذكر ان كنتم لا تعلمون অতএব জ্ঞানীদের নিকট জিজ্ঞাসা কর যদি তোমরা না জান। ( সূরা নাহল - 43) অাল্লাহ তায়ালা এখানে বলেননি “ না জানলে কিতাব দেখে নাও” । এমাম বুখারী তার ছহীতে উল্লেখ করেছেন, انما العلم بالتعلم অর্থাৎ ইলম হলো অর্জন করতে হয় ( অন্যের সান্যিধ্যে থেকে) অধ্যায়নের মাধ্যমে। এ হাদিসের ব্যাখ্যায় আল্লামা আইনি রহ. বলেন,
اي ليس العلم المعتمد الا الماخوذ من الانبياء عليه السلام علي سبيل التعليم والتعلم অর্থাৎ গ্রহণযোগ্য ইলম হলো, যা নবীগণ থেকে শিক্ষাদান ও শিক্ষা অর্জনের পদ্ধতিতে অর্জিত হয়। ( উমদাতুল কারী শরহে বুখারী 2- 483 শামেলা।)
উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় হাফেয এবনে হাজার আসকালানী রহ. বলেন, والمعني ليس العلم المعتبر الا الماخوذ من الانبياء وورثتهم علي سبيل التعلم অর্থাৎ শুধু মাত্র সে ইলম গ্রহণযোগ্য যা নবীদের থেকে অথবা নবীর ওয়রিসদের থেকে শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে অর্জিত হয়। ( ফাতহুল বারী 1- 294)
আব্দুল্লাহ এবনে মাসউদ রা. বলেন, ان الرجل لا يولد عالما وانما العلم بالتعلم অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি আলেম হয়ে জন্ম গ্রহণ করে না ; বরং কারো সান্যিধ্যে থেকে এলেম অর্জন করতে হয়। ( মুসান্নাফে ্বিনে আবী শায়বা 8-542) ( চলবে ইংশায়াল্লাহ)
এইচ. এম. রেজাউল করিম
রাজৈর, মাদারী পুর
শিক্ষক সুফফাহ মাদরাসা, জলিলপুর, মহেশপুর, ঝিনাইদহ