জাতিসংঘে ইমরান খানের ভাষণ

জাতীসংঘে ইমরান খানের ভাষণ

ইমরান খান বলেন, জাতিসংঘের মনে রাখা উচিৎ ১৯৩৯ সালে ইউরোপ হিটলারের অপরাধকে গুরুত্ব দেয়নি বলেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম  উল্লেখ করে আরো বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরএসএস নামে যে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের আজীবন সদস্য, সেই সংগঠনের 'আদর্শ হচ্ছে হিটলার এবং মুসোলিনি' এবং ঐ আরএসএস-ই মহাত্মা গান্ধীকে হত্যা করেছিল৷

পারমানবিক যুদ্ধের হুমকি

প্রায় ৫০ মিনিটের দীর্ঘ ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর মূল লক্ষ্য ছিল কাশ্মীরের ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ। তিনি বার বারই বলতে চেয়েছেন, ভারত শাসিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ করে গত প্রায় দু মাস ধরে ৮০ লাখ কাশ্মীরিকে যেভাবে 'পশুর মত' অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে তা যে কোনো সময় বিপজ্জনক পরিণতি বয়ে আনতে পারে।

ইমরান খান সাবধান করেন, আশঙ্কা রয়েছে কাশ্মীরী তরুণ যুবকরা যে কোনো সময় সহিংস বিক্ষোভ শুরু করতে পারে যার জন্য ভারত হয়তো পাকিস্তানকে দায়ী করবে।
তিনি বলেন, তেমন কিছু হলে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা নাকচ করা যায়না যে যুদ্ধ পারমানবিক সংঘর্ষের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
'যদি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনো যুদ্ধ হয়, তাহলে ছোটো দেশে হিসাবে পারমানবিক অস্ত্র ব্যবহার ছাড়া পাকিস্তানের কোনো বিকল্প থাকবে না।"
ইমরান খান অভিযোগ করেন,

 ক্ষমতায় আসার পর থেকে তিনি ভারতের সাথে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু কোনো ইতিবাচক সাড়া তিনি পাননি, বরঞ্চ মি. মোদী পাকিস্তানকে তার নির্বাচনী প্রচারণার মুখ্য ইস্যু তৈরি করেন।
জাতিসংঘে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দেয়া বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে। ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে তিনি এই বক্তব্য দেন।

ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার এই বক্তব্যের প্রশংসায় করছে নেটিজেনরা। তারা ইমরান খানের এই জ্ঞাগর্ভ ও প্রজ্ঞাপূর্ণ বক্তব্যকে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার যথাযথ দিক নির্দেশনা হিসেবে মনে করছেন।
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ তার ফেইসবুকে লিখেন,
‘জাতিসংঘে ইমরান খানের বক্তৃতা শুনলাম। প্রায় পুরোটাই কাশ্মীরময়। তিনি বারবার বলছিলেন, এজন্যই তিনি জাতিসংঘে এসেছেন। ইমরান খান বলছিলেন, দুইটি পারমাণবিক দেশের মধ্যে যু্দ্ধ শুরু হলে তা সীমান্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। তাই জাতিসংঘের উচিত বিষয়টাতে হস্তক্ষেপ করা। তিনি বারবার জাতিসংঘ রেজুলেশনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বললেন, এটা জাতিসংঘের দায়িত্ব, জাতিসংঘেরও পরীক্ষা।
 তিনি বললেন, কাশ্মীরে যখন কারফিউ উঠে যাবে তখন কাশ্মীর রক্তে ভেসে যেতে পারে, পুলওয়ামার মতো আরো ঘটনা ঘটতে পারে। ভারত তখন পাকিস্তানকে দায়ী করবে, কিন্তু এতে পাকিস্তানের কোনো দায় থাকবে না, সেটা বিশ্বকে তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন। রোহিঙ্গা, ইসলাম ফোবিয়া নিয়েও কথা বললেন তিনি।
মুসলিম নির্যাতন নিয়ে বিশ্বের নীরবতাকেও জোরালোভাবে তুলে ধরলেন। তার বক্তব্যে বারবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের হল জুড়ে তালি শোনা যায়। বিশেষ করে বক্তব্যের সময় তার হ্যান্ড জেশ্চারগুলো ছিলো দেখার মতো। এর আগে রোহানীর ভাষণ শুনেছি, কিন্তু ভাষাগত সীমাবদ্ধতার কারণে বুঝতে কষ্ট হয়েছে।’

ইমরান খানকে উদ্দেশ্য করে লিখেন মীর ইফরান হোসাইন। ‘জাতিসংঘে আপনার বক্তব্য শুনলাম, আপনার দেশের পানির সমস্যা, ইসলামী ফোবিয়া, জঙ্গীবাদ, কাশ্মির জনগনের উপর অত্যাচার, বিজেপির অতীত বর্তমান, মোদীর আমেরিকায় ভিসা বাতিল, পাকিস্তান নিয়ে অপপ্রচার, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিয়ে সুন্দর বক্তব্য ফুটে উঠেছে, মানসম্মত বক্তব্য ছিল। চীনের ঝিনজিয়াং মুসলিম নির্যাতনের উপর ও আপনার সাহসী বক্তব্য আশা করেছিলাম।’
ইমরান খানের ছবি শেয়ার করে ক্যাপশনে খাইরুল হাসান লিখেন, ‘কোন রাজনীতিকের বক্তৃতা ৫০ মিনিট ধরে শুনার ধৈর্য্য আর সময় কোনটাই আমার নেই। তবে জাতিসংঘে ইমরান খানের বলা কথাগুলো নিছক কোনো বক্তৃতাই ছিলো না; বরং একটি দিকনির্দেশনাও ছিলো। জমানার এই ক্রান্তিলগ্নে ট্রাম্প, নেতানিয়াহু, জনসন কিংবা মোদী'র মতো .....দের ভীড়ে খানের মতো সুস্থ চিন্তার রাষ্ট্রনায়কেরা এখনও আছেন এটাই বা কম কীসে?
ব্লগ কী? কিীভাবে ব্লগ তৈরি করতে হয় শিখুন শিখুন এখান থেকে

‘পুরো পঞ্চাশ মিনিট বিশ সেকেন্ড ইমরান খানের বক্তৃতা শুনলাম। জাতিসংঘে ইমরান খানের বক্তৃতায় তিনি চারটি বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। ১.গ্লোবাল ওয়ার্মিং ২.মানি লন্ডারিং ৩.ইসলামোফোবিয়া ৪.কাশ্মীর। বক্তৃতার একটা পর্যায়ে তিনি ভারতের জঙ্গী বিমানের বীরত্বপূর্ণভাবে পাকিস্তান সীমান্তের দশটি বৃক্ষ হত্যার কথা বলেন তখন মুহুর্মুহু করতালি শুরু হয়। সেই থেকে শেষ পর্যন্ত কয়েক দফা হাততালি শোনা যায়।
ইমরান খান জাতিসংঘকে বলা যায় একটা প্রচ্ছন্ন ওয়ার্নিং দিলেন। বহুদিন বাদে উপমহাদেশে একজন বুকের পাটা ওয়ালা নেতার উত্থান ঘটলো। তাঁর নেতৃত্বের দীর্ঘায়ু কামনা মঙ্গলজনক তাই কামনা করছি।’ - সাইফুল ইসলাম খানের মন

কামাল আহমাদ লিখেন, ‘সমস্ত কন্সপাইরেসি থিউরি জানার পরও ইমরান খানের বক্তৃতা শুনে মুগ্ধ হয়েছি। পুরো পঞ্চাশ মিনিটের বক্তৃতা। কোন প্রকার নোট ছাড়াই! সাবলীল কৌশলী উপস্থাপনা। বিষয়ের উপযোগিতা। আমার মনে হল, জাতিসংঘে প্রথম ‘ওয়াজ-মাহফিল!’ যাইহোক, সামনে বিদ্যমান ভারতীয় মহিলা দুজনের চেহারার দিকে তাকিয়ে মায়া লেগেছে। চোখে মুখে কী হতাশা! ভারতীয় মিডিয়ায় শো-র উঠেছে।

‘আল্লাহ তায়ালা আপনাকে এই ন্যায়ের পথে এই যুদ্ধে জয়ী হবার তৌফিক দান করুন। আমিন।’লিখেছেন এমডি মাসউদ। জুময়ার খুতবা চলাকালিন সুন্নত বা নফল পড়ার হুকুম কি?
সত্য প্রকাশ

আমার নামঃ মুফতি রেজাউল করিম। আমি একটি কওমী মাদরাসায় শিক্ষকতা করছি। পাশাপাশি এ ব্লগের সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। অনলাইন সম্পর্কে মোটামুটি জ্ঞান থাকায় সময় পেলে দ্বীন ইসলাম নিয়ে কিছু লেখার চেষ্টা করি। যেন অনলাইনেও মানুষ ইসলামি জ্ঞান অর্জন করতে পারে। আপনিও চাইলে এ ব্লগে লিখতে পারেন।

Please Select Embedded Mode For Blogger Comments

নবীনতর পূর্বতন