শাবান মাসের ফজিলত ও আমল
জুমুয়ার বয়ান |
আল্লাহ তাআলা অনুগ্রহ করে তাঁর বান্দাদের জন্যে বছরের কোন কোন মাসকে সম্মানিত ও মর্যাদাবান করেছেন। আল্লাহ তাআলার কাছে বারটি মাসের মধ্যে চারটি মাস অতি সম্মানিত ও মর্যাদাশীল। সেই মর্যাদাশীল মাসসমূহে বান্দা নেক আমল করলে তার মর্যাদা ও সম্মান আল্লাহ তাআলার নিকট আরও বৃদ্ধি পায়।
আর হিজরী বর্ষের বার মাসের মধ্যে বিশেষ ফযীলত ও মর্যাদাপূর্ণ মাস হলো- ৮ম মাস মাহে শাবান। এ মাসে রয়েছে লাইলাতুল বরাতের মতো একটি অত্যন্ত বরকতময় রজনী।
অন্যদিকে মাহে শাবান, রমযানের পূর্বের মাস হওয়ার কারণে মূলত এটি মাহে রমযানের সাধনা ও অধ্যবসায়ের পূর্ব প্রস্তুতির মাস।
রাসুলুল্লাহ (সা.) রজব ও শাবান মাসব্যাপী এ দোয়া বেশি বেশি পড়তেন,
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي رَجَبٍ، وَشَعْبَانَ، وَبَلِّغْنَا رَمَضَا
উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজব ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগ না রমাদান’।
অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! রজব মাস ও শাবান মাস আমাদের জন্য বরকতময় করুন; রমজান আমাদের নসিব করুন।’
(মুসনাদে আহমাদ, প্রথম খণ্ড: ২৫৯, শুআবুল ইমান, বায়হাকি,৩: ৩৭৫)।
আয়েশা (রাঃ) বলেন,
كان رسول الله يصوم حتى نقول لا يفطر ويفطر حتى نقول لا يصوم وما رأيت رسول الله استكمل صيام شهر إلا رمضان وما رأيته أكثر صياما منه في شعبان
অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমনভাবে রোযা রাখতে থাকতেন; আমরা বলতাম তিনি বুঝি রোযাতে কাটাবেন। আবার তিনি এভাবে রোযা বাদ দিতেন, ফলে আমরা বলতাম তিনি বুঝি আর রোযা রাখবেন না। আমি শাবান মাস ছাড়া অন্য কোন মাসে তাকে এত বেশি রোযা রাখতে দেখিনি। তিনি গোটা শাবান মাস রোযা রাখতেন। তিনি শাবান মাসের কিছু অংশ ছাড়া গোটা মাস রোযা রাখতেন।[ বুখারী ]
উল্লিখিত হাদীস অনুযায়ী আমাদের উচিৎ হলো এ মাসে বেশি বেশি রোজা রাখা৷
উসামা বিন যায়দ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল, আপনাকে শাবান মাসে যে পরিমান রোযা পালন করতে দেখি অন্য মাসে তা দেখি না। এর কারণ কী? তিনি বললেন,
ذلك شهر يغفل الناس عنه بين رجب ورمضان، وهو شهر ترفع فيه الأعمال إلى رب العالمين، فأحب أن يرفع عملي وأنا صائم
অর্থাৎ “রজব এবং রামাযানে মধ্যবর্তী এ মাসটি সম্পর্কে মানুষ উদাসিন থাকে। অথচ এটি এত গুরুত্বপূর্ণ মাস যে, এ মাসে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে মানুষের আমল সমূহ উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আমি চাই রোযা অবস্থায় আমার আমল উঠানো হোক।[ মুসনাদ আহমাদ ৫ম খন্ড ২০১ পৃষ্ঠা।]
উল্লিখিত হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুটি কারণে এ মাসে রোযা রাখতেন৷
[১] রজব এবং রামাযানে মধ্যবর্তী এ মাসটি সম্পর্কে মানুষ উদাসিন থাকে৷
[২] এ মাসে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে মানুষের আমল সমূহ উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের কে রমযানের প্রস্তুতি হিসেবে এ মাসে বেশি বেশি রোযা রাখার তাওফিক দান করুণ৷ আমীন৷