হোম কোয়ারেন্টাইন: ঘরে নামাজের জামাতে নারীদের অংশগ্রহণ


হোম কোয়ারেন্টাইন: ঘরে নামাজের জামাতে নারীদের অংশগ্রহণ
HMREZAULISLAM.BLOGSPOT.COM


হোম কোয়ারেন্টাইন: ঘরে নামাজের জামাতে নারীদের অংশগ্রহণ


করোনা পরিস্থিতির কারণে আমরা অধিকাংশ মানুষই ঘরে অবস্থান করছি৷ অবস্থান করছি হোম কোয়ারেন্টাইনে৷ এই অবস্থায় কিভাবে আমরা আমাদের নামায আদায় করবো? সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে এই প্রবন্ধে৷

এমতাবস্থায় আমরা একাকি নামায আদায় না করে বরং জামাতের সাথে আদায় করার চেষ্টা করবো৷

জামাতে নামায পড়ার সওয়াব


একা নামাজ পড়ার তুলনায় জামাতের সাথে নামাজ পড়ার ছাওয়াব সাতাশগুন বেশি।

আবদুল্লাহ ইবনে উমর রাযি. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

صلاةالجَمَاعَةِ أَفضَلُ مِنْ صَلاةِ الفَذِّ بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ درَجَةً

অর্থাৎ জামাতের সাথে নামাজ আদায় একা নামাজ আদায়ের চেয়ে সাতাশগুন বেশি ফজিলতপূর্ণ।
[বুখারী ও মুসলিম]

এ জন্য সাতাশগুন বেশি সওয়াবের আশায় আমরা একাকি নামায আদায় না করে জামাতের সাথে নামায আদায় করবে৷


ইমামতি করার যোগ্যতা


পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যিনি কুরআন সুন্নাহ সম্পর্কে বেশি ধারনা রাখে এবং যার তেলাওয়াত বিশুদ্ধ সে ইমামতি করবে৷
নামাজের মাসয়ালা মাসায়েল সম্পর্কে অভিজ্ঞ, তিনি ইমাম হওয়ার যোগ্য।
রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন,

يَؤُمُّ الْقَوْمَ أَقْرَؤهُمْ لِكتَابِ اللَّهِ، فَإِنْ كَانُوا في الْقِراءَةِ سَواءً، فَأَعْلَمُهُمْ بِالسُّنَّةِ، فَإِنْ كَانُوا في السُّنَّةِ سَوَاءً، فَأَقْدمُهُمْ هِجْرَةً، فَإِنْ كانُوا في الهِجْرَةِ سَوَاءً، فَأَقْدَمُهُمْ سِنًّا، وَلا يُؤمَّنَّ الرَّجُلُ الرَّجُلَ في سُلْطَانِهِ، وَلا يَقْعُد في بيْتِهِ عَلَى تَكْرِمتِهِ إِلاَّ بِإِذْنِهِ رواه مسلم.
অর্থাৎ লোকদের ইমামতি করবে ঐ ব্যক্তি যে তাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাব সব চেয়ে বেশী পাঠ করতে পারে। যদি তারা পাঠ করার ক্ষেত্রে সমমানের হয়, তাহলে তাদের মধ্যে যে সুন্নতের অধিক জ্ঞানী হবে সে ইমামতি করবে। যদি সুন্নতের জ্ঞানে সকলে বরাবর হয়, তাহলে তাদের মধ্যে যে সর্বপ্রথম হিজরতকারী সে ইমামতি করবে। যদি তারা সকলে হিজরতের ক্ষেত্রেও বরাবর হয় তবে তাদের মধ্যে আগে ইসলাম গ্রহণ করেছে সে তাদের ইমাতি করবে। কোন ব্যক্তি যেন কোন ব্যক্তির অধীনস্থ স্থানে তার অনুমতি ব্যতীত ইমামতী না করে এবং কোন ব্যক্তির জন্য নির্ধারিত আসনে যেন তার অনুমতি ব্যতীত না বসে”।
[মুসলিম, অধ্যায়, মাসাজিদ এবং নামাযের স্থান সমূহ, হাদীস নং ৬৭৩]

নাবালেগ ছেলে কি ইমামতি করতে পারবে?

তবে নাবালেগ ছেলেকে ইমাম বানানো যাবেনা৷
উমর বিন আবদুল আযীয ও আতা রাহ. বলেন,

لا يؤم الغلام قبل ان يحتلم في الفريضة ولا غيرها
অর্থাৎ নাবালেগ ছেলে যেন প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার আগে ইমামতি না করে। ফরয নামাযেও নয়, অন্য নামাযেও নয়।
[মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৩৫২৪]


মহিলাদের নামাজে দাঁড়ানোর নিয়ম


কাতারের ক্ষেত্রে মহিলারা দাড়াবে সকলের পেছনে৷
রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন,

خير صفوف الرجال أولها، وشرها آخرها، وخير صفوف النساء آخرها، وشرها أولها

অর্থাৎ ‘পুরুষদের প্রথম কাতারটি উত্তম এবং শেষ কাতারটি মন্দ। আর নারীদের শেষ কাতারটি উত্তম এবং প্রথম কাতারটি মন্দ।’
[সহীহ মুসলিম, নামাজ অধ্যায়, ২/৩২; এবং অন্যান্য হাদীস গ্রন্থ।]

মহিলা কি ইমাম হতে পারে?


মনে রাখতে হবে পরিবারের সদস্যদের কোন মহিলাকে ইমাম বানানো যাবে না৷ সে যত বড়ই কুরআন সুন্নাহয় পারদর্শী হোক না কেন৷

কোন মহিলার জন্য কোন পুরুষের ইমাম হওয়া জায়েয নেই। এতে পুরুষের নামায বাতিল বলে গণ্য হবে। (ফাতাওয়া লাজনাতিত দাইমা ৭/৩৯১)

এর দলিল হচ্ছে–

১। জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাদের উদ্দেশ্যে দেয়া এক খুতবায় বলেছেন,

أَلَا لَا تَؤُمَّنَّ امْرَأَةٌ رَجُلًا

অর্থাৎ খবরদার কোন মহিলা যেন পুরুষের ইমাম না হয়।
(ইবনে মাজাহ ১০৭১)

২। রাসূলুল্লাহ ﷺ  বলেছেন,

لَنْ يُفْلِحَ قَوْمٌ وَلَّوْا أَمْرَهُمْ امْرَأَةً

অর্থাৎ ঐ সম্প্রদায় কখনো সফলকাম হতে পারে না, যারা কোন মহিলাকে তাদের বিষয়াদির নেতা নিযুক্ত করে।
(বুখারী ৪০৭৩ নাসাঈ ৫২৯৩)

যেহেতু ইমামতি এক প্রকারের নেতৃত্ব, তাই তাদের এ পদে নিযুক্ত করা হারাম।


নামাজে ইমামের ভুল হলে মুক্তাদির করনীয়


নামাজে ইমামের ভুল হলে মুক্তাদি লুকমা দিবে ৷

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-

التسبيح للرجال والتصفيق للنساء
অর্থাৎ তাসবীহ হল পুরুষদের জন্য, আর তাসফীক তথা মৃদু তালি হল মহিলাদের জন্য। [বুখারী]
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে করোনা ভাইরাস থেকে হেফাযত করুন৷ আমীন৷

লেখক: মুফতি রেজাউল করিম,
মুহাদ্দিস সুফফাহ মাদরাসা, মহেশপুর, ঝিনাইদহ

সত্য প্রকাশ

My name: Mufti Rezaul Karim. I am teaching in a communal madrasah, I try to write something about Deen Islam when I have time because I have a fair amount of knowledge about online. So that people can acquire Islamic knowledge online. You can also write on this blog if you want.

Please Select Embedded Mode For Blogger Comments

নবীনতর পূর্বতন