জাকির নায়েকের লেকচার


জাকির- নায়েকের- লেকচার


ড. জাকির নায়েক হাফিযাহুল্লাহ মাযহাব ও মাযহাবের ভিন্নতা নিয়ে চমৎকা যে আলোচনাটি করেছে এতদিন যাবত কওমী ওলামায়ে কেরাম করে তা করে আসছিলেন৷ যার কারণে আহলে হাদীস সহ এদেশের বিভিন্ন বাতিল ফিরকা আমাদেরকে মূর্খ, দলান্ধ ও গোড়া বলে গালি দিয়েছেন৷ প্রশ্ন হলো, এবার জাকির নায়েক কে আপনারা কি বলবেন? 

আপনারা এতদিন জাকির নায়েক কে নিয়ে নিজেদের বিজনেস টিকিয়ে রেখে ছিলেন৷ মাযহাব মানা শিরক ও কুফুরী এ জাতীয় চটকদার বিভিন্ন ফতোয়া দিতেন৷ এবার তো তিনি মাযহাব নিয়ে নিজের অভিমত ব্যক্ত করলেন৷ এবার তার ব্যাপারে আমরা আপনাদের ফতোয়ার জন্য ওয়েট করছি৷

(পাঠকদের বোঝার সুবিধার্থে তার বক্তব্যটি বাংলায় অনুবাদ করে পাবলিশ করা হলো)



পাকিস্তানের লাহোর থেকে আব্দুল করিম নামের এক ভাইয়ের প্রশ্নের উত্তরে ড. জাকির নায়েক বলেন,


যদি সব মুসলিম একই কুরআন হাদীস মানে; তাহলে চার মাযহাব তৈরি হলো কেন? কেন এত মত পার্থক্য? এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর প্রশ্ন৷ আমি এই বিষয়ে একমত যে, আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের মধ্যে মুসলিমদের বড় একটি অংশ আমরা সবাই একই কুরআন হাদীস মেনে চলি৷ কুরআনের পর বুখারী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ৷ তারপর সহীহ মুসলিম৷ তারপর কুতুবে সিত্তাহ, আবু দাউদ, তিরমিযি,  ইবনে মাযাহ,  নাসাঈ৷ 

এই বিষয়ে সবাই একমত৷ এখন প্রশ্ন হলো, মাযহাব চারটি কেন? এবং কেন তাদের মধ্যে মতপার্থক্য হলো?




প্রধান যে চারটি মাযহাব বর্তমানে প্রচলিত আছে ইমাম আবু হানীফা, এমাম মালেক, ইমাম শাফেয়ী,  ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল৷ আমি তাদের সকলকে ভালোবাসি ও শ্রদ্ধা করি৷ দোয়া করি আল্লাহ যেন তাদেরকে দয়া করেন ও জান্নাতুল ফিরদাউস দান করেন৷ 



প্রথমেই আপনাকে (প্রশ্নটি) সংশোধন করে দেই৷ এই চারটি মাযহাব এসেছে, ইসলামকে মুসলিম উম্মাহর নিকট ব্যাখ্যা করতে৷ তারা সব বিষয়ে সবসময় মতপার্থক্য করেন না৷ তারা মাঝে মধ্যে মতভেধ করেন৷ প্রায় ৫২-৯৫% বিষয়ে সব মাযহাবের মত একই৷ ছোট খাট কিছু বিষয়ে তাদের মতভেদ আছে৷ 




প্রধান বিষয়গুলো যেমন, পাঁচ ওয়াক্ত সালাত যা আমরা আদায় করি৷ যাকাতের বিষয়ে, হজ্বের বিষয়ে, চারটি মাযহাব আসলেই একই রকম৷ সালাতের ছোট ছোট কিছু বিষয় কিংবা হজ্জ সবই ছোট খাট কিছু মতভেদ৷ চার ইমামের সবাই বলেছেন, যদি তোমরা আমার ফতোয়া যা আল্লাহ ও তার রাসূলের বিপরীতে যাবে, যা কুরআন ও সহীহ হাদীসের বিপরীতে যাবে আমার সেই ফতোয়াকে দেওয়ালে ছুড়ে ফেলবে৷ 




এই চারজন ইমামের সবাই অনেক জ্ঞানী ছিলেন৷ সকলেই দ্বীনকে আমাদের নিকট ব্যাখ্যা করেছেন৷ তাহলে তারা মতভেদ করলেন কেন? আমি নিজেও অনেক বছর ধরে এর জবাব খুঁজেছি৷ আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহ আমাকে দয়া করেছেন৷ অনেক স্কলারের সাথে আমার দেখা হয়েছে৷ চারটি মাযহাবের মধ্য থেকেই আমি তাদের সাথে অনেক সময় কাটিয়েছি৷ আমি নিজেও তাদেরকে প্রশ্নটি করেছি৷ তাদের উত্তরগুলোর মধ্যে কিছু কিছু ভালো ছিলো৷ কিন্তু সাধারণ মানুষদের উপযোগী উত্তর ছিলো না৷ 





তাদের সাথে সাক্ষাতের পর বিভিন্ন মতভেদ সম্পর্কে আমার দৃষ্টিভঙ্গি বড় হয়েছে৷ আল্লাহ সূরা ইমরানের ১০৩ আয়াতে বলেছেন, আল্লাহর রশি শক্ত করে ধর; বিভক্ত হইও না৷ কুরআন হাদীসকে আমাদের শক্ত করে ধরতে হবে৷ সাধারণ মানুষকে বুঝানোর জন্য আমি কিছু উদাহরণ দিবো৷ উদাহরণ দিয়ে বুঝানোটা খুবই ভালো৷ 




আমি খুব সহজ একটা প্রশ্ন করি, তাদের নিকট যারা ইংরেজি জানেন৷ 'কালার' শব্দটির বানান কি? বলতে পারবেন? ফেসবুকে বা ইউটিউবে উত্তর দিতে পারেন৷ আমি কোনো উত্তর পাচ্ছি না৷ কেউ বলবে 'colour' আবার কেউ বলবে 'color' কোনটা সঠিক? যে ইংরেজি ভালো জানে সে বলবে, প্রথমটি হচ্ছে ব্রিটিশদের বানান৷ ২য় টি হচ্ছে আমেরিকান বানান৷ তাহলে কোনটা সঠিক? Colour নাকি color?



কেউ বলবে প্রথমটা সঠিক কেউ বলবে দ্বিতীয় টা৷ কেউ বলবে দুটোই সঠিক৷ কিন্তু মতভেদ হলেও কেউ এটা নিয়ে মারামারি করেন না৷ ব্রিটিশদের শাসনাধীন দেশে ব্রিটিশ নিয়মে বানান করবে৷ আমরা দুটো বানানেই রাজি আছি৷ ব্রিটিশরা একটি বানান পছন্দ করে৷ কিন্তু কেউ অন্যটা মানলেও  সমস্যা মনে করে না৷ আমেরিকানরাও এরকমই বলবে৷ 





একইভাবে আপনি 'often' শব্দটি কীভাবে উচ্চারণ করেন? কেউ বলবে, 'অফেন' কেউ বলবে, 'অফটেন'৷ একেকজন একেকটা বলবে৷ 'T' এর উচ্চারণ হবে কি না এ নিয়ে বিতর্ক আছে৷ কিন্তু সবাই বলবে দুটোই সঠিক৷ 



একই ভাবে, আমাদের যে চারটি মাযহাব আছে৷ এ ছাড়াও ছিলেন হাজার হাজার স্কলার ও ইমাম৷ ইমাম আবু হানিফা, শাফেয়ী, মালেক, আহমাদ বিন হাম্বল৷ তারা ছিলেন বেশি জনপ্রিয়৷ কিংবা তাদের ছাত্ররা তাদেরকে জনপ্রিয় করে তোলেন৷ এ ছাড়াও অনেক ইমাম ও শাইখ ছিলেন৷ এভাবেই আমরা প্রধান চারটি মাযহাব পেয়েছি৷ কিন্তু তারা কেউ উম্মাহকে বিভক্ত করতে চাননি৷ কারণ, কুরানে এটাকে সরাসরি নিষেধ করা হয়েছে



আপনার জন্য নির্বাচিত আর্টিকেল: 




তাহলে কেন মতভেদ হয়? আগে আমি ভাবতাম, মনে হয়, হাদীস সহীহ ও যঈফ হওয়ার বিষয়ে মতভেদ হয়৷ কিন্তু এটা সঠিক উত্তর নয়৷ কিছু ক্ষেত্রে এটা হতে পারে৷ বিভিন্ন মাযহাবের স্কলারদের সাথে সাক্ষাত করার পর আমি বানান ও উচ্চারণের উদাহরণ দিলাম৷ তাহলে মতবিরোধের মূল কারণ কি? 




আমার পড়াশুনা অনুযায়ী, উসূলে ফিকহ হচ্ছে এমন বিষয়, যা স্পষ্টভাবে কুরআন হাদীসে নেই৷ মদ হারাম কারণ আল্লাহ হারাম বলেছেন৷ তাই এটা নিয়ে কোনো মতভেদ নেই৷ কুরআন হাদীস বুঝার ক্ষেত্রে ভিন্নতা থাকলে মতভেদ হয়৷ উসূলে ফিকহে মাসআলা বের করার জন্য কিছু মূলনীতি আছে৷ কেউ ৫ টি কেউ ১০ টি মূলনীতি অনুসরণ করেন৷ এটা নিয়ে বিস্তারিত বলার সময় নেই৷ আমি কয়েকটি উদাহরণ দিব৷





১৷ মূলনীতির মতভেদই হচ্ছে ১ নম্বর মতভেদ৷
মূলনীতির প্রথম দুটি সব মাযহাবেই একই৷ সব মাযহাবেই প্রথমটি হলো, কুরআন৷ এতে কোনো মতভেদ নেই৷ 

২৷ মুতাওয়াতির হাদীস সমূহ৷ সব মাযহাবই মানে দ্বিতীয়টি হচ্ছে মুতাওয়াতির হাদীস৷ মুতাওয়াতির হাদীস কি? হাদীসের বিভিন্ন শ্রেণিবিভাগ আছে৷ এর মধ্যে একটি হচ্ছে, হাদীসের বর্ণনাকারীদের ভিত্তিতে৷ মতাওয়াতির হাদীস হচ্ছে, প্রত্যেক প্রজম্মে যেই হাদীসের অসংখ্য বর্ণনাকারী রয়েছেন৷ অর্থাৎ অসংখ্য সাহাবী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন৷ তারপর অসংখ্য তাবেয়ী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন৷ তারপর অসংখ্য তাবে তাবেয়ী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন৷






সুতরাং প্রত্যেকযুগে হাদীসটির অসংখ্য বর্ণনাকারী রয়েছে৷ অর্থাৎ বর্ণনাকারীদের ভিত্তিতে হাদীসের শ্রেণিবিভাগ রয়েছে৷ যেমন, গরীব হাদীস৷ যার মাত্র একটি বর্ণনাসূত্র রয়েছে৷ অাহাদ হাদীস মাত্র একজন বর্ণনাকারী৷ যেমন, সহীহ বুখারীর প্রথম হাদীস৷ উমর রাযিআল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল৷ বিভিন্ন গ্রন্থে হাদীসটি পাবেন৷ কিন্তু মাত্র একজন সাহাবী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন৷ যে কোনো যুগে মাত্র একজন যদি হাদীসটি বর্ণনা করেন এটাকে বলে আহাদ হাদীস৷ 




হাদীসটির অনেক বর্ণনাসূত্র আছে৷ কিন্তু সবগুলোই উমর রাযিআল্লাহু আনহু পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়েছে৷ এবং উমর রাযিআল্লাহু আনহু রাসূল থেকে বর্ণনা করেছেন৷ তাই এটা আহাদ হাদীস৷ এটা মাশহুর হাদীস হতে পারে এবং বিভিন্ন শ্রেণিতে হাদীসটি পড়তে পারে৷ সবচেয়ে সেরা হচ্ছে মুতাওয়াতির৷ অর্থাৎ প্রত্যেক যুগে অনেক বর্ণনাকারী আছেন৷ ২০ জন হতে পারে ৩০ জনও হতে পারে৷ সুতরাং ১. কুরআন ২. মুতাওয়াতির হাদীস৷ এ বিষয়ে সবাই একমত ৷ তিন নম্বরটি নিয়ে মতভেদ আছে৷ কারো কারো ৫, ৬,৭,১০ টি মূলনীতি আছে৷ কারো কারো মত তিন নম্বরটি হচ্ছে আহাদ হাদীস৷ যদি এটা সহীহ হয় কোনো সমস্যা নেই৷ কেউ কেউ বলেছেন, না৷ তিন নম্বরটি হচ্ছে উরফ (প্রথা)৷



মদীনায় যদি এটা প্রচলিত থাকে তাহলে এটাই তিন নম্বরে৷ কারো মতে তিন নম্বর হচ্ছে কিয়াস৷ একেক মাযহাবে রয়েছে একেক মূলনীতি৷ তিন নম্বরটি নিয়ে একেক মাযহাবে রয়েছে একেক মূলনীতি৷  এ জন্য কেউ প্রচলিত প্রথাকে অগ্রাধিকার দেয় আহাদ হাদীসের বিপরীতে৷ সুতরাং মতভেদের কারণ কোনটিকে আপনি অগ্রাধিকার দিচ্ছেন? আপনি কি উরফকে প্রাধান্য দিচ্ছেন? আপনি কি কিয়াসকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন? নাকি আপনি আহাদ হাদীসকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন? তিন নম্বর থেকেই মতভেদ শুরু৷ 


কোনটিকে আপনি অনুসরণ করছেন সে অনুযায়ী ফতোয়া বিভিন্ন রকম হয়৷ কিন্তু মাসআলাগুলো সবই ছোট খাট বিষয়৷ আমাদেরকে বুঝতে হবে আমরা যেন চারটি মাযহাবকেই সম্মান করি৷ কারণ চারটির ভিত্তিই কুরআন হাদীস৷ কিন্তু অগ্রাধিকার বিভিন্ন হতে পারে৷



কারো কারো মতে সালাতের হাদীস মুতাওয়াতির হতে হবে৷ কারণ সালাত প্রকাশ্যে সবার সামনে পড়া হতো৷ এখন সীলাতের বিষয়ে যদি আহাদ হাদীস আনা হয় ৷  যদিও এটা সহীহ হয় আমি মানবো না৷ সালাতের জন্য মুতাওয়াতির হাদীস না হলে আমি মানবো না৷ এটা তাদের অভিমত৷ আপনি মানতেও পারেন নাও পারেন৷ আপনি বলতে পারেন, এটা আহাদ হাদীস হওয়াই যথেষ্ট৷ এটা সহীহ হাদীস৷ 


আরেক মাযহাব বলবে, অন্য বিষয়ে আহাদ হাদীস চলবে৷ কিন্তু সালাহ! এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ রাসূল আলাইহিস সালাম পাঁচ ওয়াক্ত পড়েছেন৷ এটা মুতাওয়াতির হতে হবে৷ মতের ভিন্নতা৷ 







এভাবেই ৩, ৪, ৫ নাম্বার নিয়ে মাযহীবগুলোতে মতভেদ৷ সবার জন্য বোঝাটা একটু কঠিন হতে পারে৷ 
২ নাম্বার: হাদীস সহীহ কি না? এ কারণে ও মতভেদ হয়৷ কেউ বলবে এটা হাসান হাদীস৷ যা সহীহ হাদীসের নিচের স্তরে৷ কেউ বলবে না, এটা যঈফ হাদীস৷ যঈফ হাদীস কোনো দলীল নয়৷ ফরয বা হারাম হওয়ার জন্য যঈফ হাদীস যথেষ্ট নয়৷ এটা আলাদা গুরুত্ব থাকতে পারে৷ এভাবে হাদীস বিশেষজ্ঞরা মতভেদ করতে পারেন৷ হাসান নাকি সহীহ? এ নিয়ে মতভেদ হয়৷ হাসানের অবস্থান সহীহর নিচে৷



হাদীসটি সহীহ নাকি মাউযু৷ এটা আরেকটি শ্রেণিবিভাগ৷ বিস্তারিত বলার সময় নেই৷ সুতরাং মতভেদের ২ নম্বর কারণ হাদীসটি সহীহ না কি যঈফ৷



৩ নম্বর হাদীস বুঝার ক্ষেত্র পার্থক্য৷ যেমন, রুকুর পরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাতকে পূর্বের অবস্থানে রাখলেন৷ কোনো মাযহাব বলল৷  আমি নাম উল্লেখ করছি না৷ কোনো মাযহাব বলল৷ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রুকুর পর হাত বুকে বাধলেন৷  তাই তারা রুকুর পর হাত বুকের উপর রাখে৷



অন্যরা বলেন, সালাত শুরুর পূর্বে হাত কোথায় থাকে৷ হাত দুই পাশে থাকে৷ তাই রুকুর পরও হাত দুই পাশে থাকবে৷ দেখা যাচ্ছে হাদীস বোঝার ক্ষেত্র মতভেদ হয়৷ সবাই একমত হাদীসটি সহীহ৷ কেউ বুঝলেন, হাত রাখতে হবে ঠিক আগ মহূর্তে যেভাবে ছিলো সেভাবে৷ বাকিরা বুঝলো সালাত শুরুর পূর্বে যেভাবে ছিলো সেভাবে রাখতে হবে৷ অর্থাৎ ব্যাখ্যাগত কারণে মতভেদ৷ 



১৷ মূলনীতির অগ্রাধিকার
২৷ সহীহ নাকি যঈফ
৩৷ হাদীসের অর্থ বুঝতে পারা
একই ভাবে কুরআনের আয়াত বোঝার ক্ষেত্রেও মতভেদ হয়৷ 
যেমন, কুরআন বলছে, নারী স্পর্শ করলে অযু ভেঙ্গে যায়৷ কেউ বলেছেন, শারীরিক স্পর্শ অযু ভেঙ্গে যায়৷ আরবি শব্দ 'মাসাহ' 'লামাসাহ' থেকে এসেছে৷ 


'লামাসাহ' এর দুটি অর্থ৷ (১) যৌন স্পর্শ (২) শারীরিক স্পর্শ৷ কেউ কেউ শারীরিক স্পর্শ অর্থ নিয়েছেন৷ অন্যরা বলেছেন, না৷  অযু ভাঙ্গবে যদি যৌন স্পর্শ হয়৷ এভাবে কুরআনের আযাত বুঝতে গিয়ে মতভেদ হয়৷ যে কোনো কারণেই হোক না কেন? মতভেদগুলো ক্ষুদ্র বিষয়ে৷ এগুলো নিয়ে মারামারি করা উচিৎ নয়৷ দেখা যাচ্ছে কিছুদিন পড়াশুনা করেই তারা নিজেদের ফিকহকেই একমাত্র সঠিক মনে করে৷ যা ভুল৷ উনারা সকলেই বড় স্কলার৷ আমরা তাদের সকলকেই ভালোবাসি৷ সম্মান করি৷ মতভেদ করলেও অন্যের মতকে তারা সম্মান করেছেন৷ নিজেদের মতকে তারা উত্তম ভাবতেন৷ তার মানে এই না যে, বাকিরা সবাই ভুল৷ কিন্তু বর্তমানে অনেক ভাবে, শুধু আমিই সঠিক৷




সবই যে  শুধু 'আমারটাই সঠিক' বলাটা বড় একটি সমস্যা৷ অথবা বলবেন, আমি মনে করি এটা উত্তম৷ কিন্তু শুধু নিজেই সঠিক ভাবলে হানাহানি তৈরি হয়৷ মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন৷ এ গুলো খুবই ক্ষুদ্র বিষয়৷ মতভেদ থাকবেই৷ সাহাবাদের মধ্যেও ছিলো৷ মতভেদ থাকার বিষয়ে আমাদের একমত হতে হবে৷ এগুলো কোনোটাই বড় কোনো ইস্যু নয়৷ তাই আমি বলব, মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন৷ ইমামদের সম্মান করা উচিৎ৷ আলেমদের সম্মান করা উচিৎ ৷ এবং সাধ্যমত কুরআন ও সহীহ হাদীসের উপর আমল করা উচিৎ৷ আশা করি উত্তর পেয়েছেন৷ 





আপনার জন্য নির্বাচিত আর্টিকেল
সত্য প্রকাশ

আমার নামঃ মুফতি রেজাউল করিম। আমি একটি কওমী মাদরাসায় শিক্ষকতা করছি। পাশাপাশি এ ব্লগের সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। অনলাইন সম্পর্কে মোটামুটি জ্ঞান থাকায় সময় পেলে দ্বীন ইসলাম নিয়ে কিছু লেখার চেষ্টা করি। যেন অনলাইনেও মানুষ ইসলামি জ্ঞান অর্জন করতে পারে। আপনিও চাইলে এ ব্লগে লিখতে পারেন। মোবাইলঃ 01782-40 91 69

Please Select Embedded Mode For Blogger Comments

নবীনতর পূর্বতন