ইমাম আবু হানিফা কি হাদীস জানতেন না? জানতে ক্লিক করুন এখানে ইমাম আবু হানিফা রহ.কি হাদীস জানতেন না?
ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন ( রহ.) ছিলেন হানাফী মাযহাবের অনুসারী
ইমাম যাহাবী (রহ.) বলেন,
قد كان أبو زكريا رحمه الله حنفيا في الفروع
অর্থাৎ ফিকহের ক্ষেত্রে ইমাম আবূ যাকারিয়া ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন হানাফী ছিলেন।
ইমাম যাহাবী আরো বলেন,
ابن معين كان
من الحنفيّةِ الغُلاة في مذهبه
অর্থাৎ ইমাম ইবনে মাঈন হানাফী ছিলেন। তিনি তাঁর মাযহাবের ব্যাপারে কট্টর ছিলেন।
তিনি সর্বদা আবু হানিফা রহ. এর মতকে প্রাধান্য
দিতেন।
ইবরাহীম ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে জুনাইদ (রহ.) বলেন,
فقلت ليحيى : ترى أن ينظر الرجل في رأي الشافعي ، وأبي
حنيفة ؟ قال : ما أرى لأحد أن ينظر في رأي الشافعي ، ينظر في رأي أبي حنيفة أحب
إلي
অর্থাৎ আমি ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কোনো ব্যক্তির ব্যাপারে আপনি কি
বলেন সে ইমাম আবূ হানীফার নাকি ইমাম শাফেয়ীর মত অনুসরণ করবে?’ তিনি বললেন, ‘আবূ হানীফার। আমার
নিকট আবূ হানীফার মতামত-ই পছন্দনীয়।’
যে হাদীসের ব্যাপারে ইয়াহইয়া ইবনে মাঈনের জানা নাই, তাহলে সেটা হাদীসই নয়
ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহ.) বলেন,
كل حديث لا يعرفه يحيى بن معين ، فليس هو بحديث
অর্থাৎ ‘‘যে হাদীসের ব্যাপারে ইয়াহইয়া ইবনে মাঈনের জানা নাই, তাহলে সেটা হাদীসই
নয়।
(তারিখে বাগদাদ,খন্ড,16
পৃষ্ঠা,263)
আহমাদ ইবনে উকবা রহ. বলেন,
سألت يحيى بن مَعِين: كم كتبت من الحديث؟ قال: كتبت بيدي هذه ستَّمائة ألف حديث، " هذا العدد
يشتمل على الأحاديث المكررة
অর্থাৎ
আমি ইয়াহইয়া ইবনে
মাঈনকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কয়টি হাদীস
লিখেছেন? তিনি বললেন, আমি আমার এই হাত দ্বারা ছয় লক্ষ হাদীস লিপিবদ্দ করেছি।( এই
সংখাঠি হাদীসের তাকরারসহ।)
(খতীব বাগদাদী, তারিখে
বাগদাদ, খন্ড,16 পৃষ্ঠা,263)
তিনি একটি হাদীস পঞ্চাশ বারেরও বেশী লিখতেন
মুজাহীদ
ইবনে মুসা বলেন,
كان ابن معين يكتب الحديث نيفا وخمسين مرة
অর্থাৎ
ইয়াহইয়া ইবনে
মাঈন রহ. একটি হাদীস পঞ্চাশ বারেরও বেশী
লিখতেন।
তিনি ছিলেন জারাহ ওয়াত তা’দীল অধিক জ্ঞানী
ইমাম আব্দুল মু’মিন নাসাফী বলেন,
سألت أبا علي
صالح بن محمد : من أعلم بالحديث يحيى بن معين أو أحمد بن حنبل ؟ فقال : أحمد أعلم
بالفقه والاختلاف ،
وأما
يحيى ، فأعلم بالرجال والكني
অর্থাৎ ইমাাম আবূ সালেহ বিন মুহাম্মাদ (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়, হাদীসশাস্ত্রে
জ্ঞানী বেশি কে? আহমাদ ইবনে হাম্বল নাকি ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন? তিনি জবাব দিলেনঃ ‘‘ইমাম আহমাদ ফিকহ ও ইমামগণের ইখতিলাফ সম্পর্কে বেশি জ্ঞানী ছিলেন। আর ইয়াহইয়া ইবনে
মাঈন জারাহ ওয়াত তা’দীল (হাদীসের শুদ্ধা-শুদ্ধি নির্ণয় এবং হাদীসের রাবীদের সমালোচনা) এবং কুনী (রাবীদের নাম, উপনাম ও বংশ পরিচয়ের) শাস্ত্রে
অধিক জ্ঞানী ছিলেন।’’
আব্দুর রহমান ইবনে হাম্মাদ বলেন আমাকে আবু হাতেম রাযী বলেছেন,
إذا رأيتَ البغدادي
يحب أحمد بن حنبل، فاعلم أنه صاحب
سنَّة، وإذا رأيتَه يُبغض يحيى بن مَعِين، فاعلم
أنه كذَّاب
অর্থাৎ তুমি যখন দেখবে কোনো
বাগদাদবাসী ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহ. কে ভালোবাসে তাহলে তুমি যেন রেখ সে সুন্নতের অনুসরণকারী।আর যখন দেখবে তারা ইয়াহইয়া ইবনে
মাঈন এর সাথে বিদ্বেষ পোষণ করে তাহলে তুমি
যেনে রেখ সে কাজ্জাব বা মিথ্যাবাদী।
(খতীব বাগদাদী, তারিখে বাগদাদ, খন্ড,6
পৃষ্ঠা 263)
হারুন ইবনে মারুফ রহ. বলেন, আমাদের নিকট এক
শায়খ আসলেন। আমরা তার নিকট থেকে হাদীস লিখতে চাইলে শায়খ কিতাব নিলেন।হঠাৎ যখন দরজার কড়া নড়ল। শায়খ বললেন, ইনি কে? বলা হলো, আহমাদ ইবনে হাম্বল। তাকে আসার অনুমতি দিলেন। শায়খ আপন অবস্থায়, কোনো নড়াচড়া করলেন না।পুনরায় আর একজন দরজার কড়া নাড়লেন। তিনি বললেন, কে? বললেন, আহমাদ দাওরাকী। তাকে আসার অনুমতি দিলেন। শায়খ আপন অবস্থায় কোনো নড়াচড়া করলেন না।অতপর ইবনে রুমী কে, আবু খায়সামাকে আসার অনুমতি দিলেন।অতপর আবার দরোজার কড়া নাড়ানো হলো। শায়খ বললেন, কে? কেউ বললেন,ইয়াহইয়া ইবনে
মাঈন। অতপর আমি শায়খ কে দেখলাম,
ارتعدت يده، وسقط منه الكتاب
- তার
হাত কেপে উঠল।এবং হাত থেকে কিতাব পড়ে গেল।
(খতীব বাগদাদী, তারিখে বাগদাদ,
খন্ড,6 পৃষ্ঠা 263)
তিনি ছিলেন বিশ্বস্থ ও সত্যবাদী
হারুন ইবনে বাশীর রহ বলেন,
رأيت يحيى بن معين استقبل
القبلة رافعاً يديه يقول: اللهم إن كنتُ تكلمتُ في رجل وليس هو عندي كذاباً فلا
تغفر لي
অথাৎ
আমি ইয়াহইয়া ইবনে
মাঈন কে দেখলাম যে, তিনি কিবলার দিকে
হাত তুলে বলছেন, “ হে আল্লাহ! আমি যদি কারো ব্যাপারে মন্তব্য করি আর সে যদি আমার
নিকট মিথ্যাবাদী বলে সাব্যস্ত না হয়, তাহলে আমাকে আপনি ক্ষমা করবেন না।
(জামালুদ্দিীন মিজ্জি,
তাহযিবুল কামাল ফি আসমায়ির রিজাল,খন্ড,31 পৃষ্ঠা, 554)