কওমি মাদ্রাসাগুলো শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রেখে শুধুমাত্র ভর্তি কার্যক্রম চালু রেখা হয়েছে । শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো ঘোষণা না আসায়, শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা যাচ্ছে না।
পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের ওলামায়ে কেরাম এখনই মাদরাসা খুলতে অনাগ্রহী। পরিস্থিতি বিবেচনা করে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে চান তারা। কবে
নাগাদ খুলে দেওয়া হচ্ছে বন্ধ মাদ্রাসার দুয়ার সে বিষয়টি এখনো নিশ্চিতভাবে জানে না কেউই।
প্রশ্ন উঠেছে মাদ্রাসা খুলে দিলে করণা সংক্রমণ এড়ানোর কতটুকু প্রস্তুতি নিতে পেরেছে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডগুলো। বিপুল পরিমাণ জনসমাগম ও ঘনবসতির মাঝে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা আদৌ কি সম্ভব?
কওমি মাদ্রাসাগুলো আপাতত ভর্তি কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছে। যখন সরকার ও কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ অথরিটি আল হাইয়াতুল উলিয়া মাদ্রাসা উন্মুক্ত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিবে, তখন আল হাইয়াতুল উলিয়া বৈঠক করে সকল প্রকার নিয়ম নীতি প্রণয়ন করা হবে।
তবে আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে,
১. যেহেতু কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসার বাইরে যান না। মাদ্রাসার আইন ও নিয়ম কানুন মেনে চলেন সর্বদাই। চার দেয়ালই তাদের আসল ঠিকানা।
২. করোনা সংক্রমনের এই সময়ে আমরা ছাত্রদেরকে সর্বাবস্থায় মাদ্রাসায় রাখবো। অন্য সময়েও সাধারণত ছাত্ররা খুব একটা বের হয়না। মাদ্রাসায় তাদের আপন ঠিকানা। তাই বাহির থেকে সংক্রমিত হয়ে আসার সম্ভাবনা কম।
৩. আমরা অভিভাবকদের মাদ্রাসায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারি। শুধুমাত্র এই সময়ের জন্য মাদ্রাসায় বাহির থেকে মানুষ আসা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। তাতেও কিছুটা নিরাপত্তা পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।
৪.যেহেতু ভেতরের মানুষ বাইরে যাচ্ছে না, বাইরের মানুষ ভেতরে ঢুকতে পারছে না ৷ এটা আমাদের জন্য ইতিবাচক দিক হতে পারে।
৫. বিশেষত মাদ্রাসার অভ্যন্তরীণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা যায়। তাতেও ভালো ফলাফল মিলবে ইনশাআল্লাহ।
৬. ঢাকার প্রতিটি মাদ্রাসায় ছাত্ররা ভিড় করে থাকেন। অন্তত এই সময়ে এটা উচিত হবে না। যে যেখানে আছেন সেখানে এবছরের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে পারেন। প্রতিটি মাদ্রাসা পুরাতন ছাত্রদের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান চালু রাখতে পারেন।
সে ক্ষেত্রে গ্রামের মাদ্রাসাগুলোকে তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা আরও উন্নত করতে হবে। তাহলে ছাত্রদের মাঝে শহরমুখী ভাব কেটে যাবে।যোগ করেন বেফাকের যুগ্ম মহাসচিব।
৭. আমরা ছাত্র ভর্তি কম নিবো, পুরাতন ছাত্রদের অগ্রাধিকার দিবো, আশপাশের শিক্ষার্থীদের অনাবাসিক ব্যবস্থা করবো।
৮. ক্লাসের টাইমে একটু ফাঁকা হয়ে বসবে। গোসলখানায় ভিড় কম করবে। বোর্ডিং ঘরে খাবারের জন্য অযথা সিরিয়াল ধরবে না।
৯. এবং ক্লাসে প্রত্যেক ছাত্রের মাস্ক ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক করা ৷
১০.জ্বর ঠাণ্ডা যাদের হবে তাদেরকে ছুটি দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া ৷
মোটকথা যত প্রকার স্বাস্থ্যবিধি রয়েছে, আমরা সবগুলো বাস্তবায়ন করতে পারব। ছাত্রের সংখ্যা কমিয়ে আনলে, ছাত্রদের মাঝে সচেতনতা তৈরি করতে পারলে এবং প্রতিটি ক্লাস রুমে নির্ধারিত দূরত্ব নিশ্চিত করতে পারলে আশা করি সহজ হবে। আমাদের প্রভু আমাদের রক্ষা করবেন। ইনশাআল্লাহ।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সতর্কতা অবলম্বন করে খুলে দেওয়া হোক সেই প্রতিষ্ঠানগুলো যেখান থেকে হেরার জ্যোতি ছড়ায়। কোরআনের প্রেমিকেরা গান গায়। হাদিস পাঠে রাসুল সা. প্রেমে মগ্ন থাকে। তবে সরকার কখন অনুমতি দিবেন, উত্তর জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন।