আবু ত্বহা মুহাম্মাদ আদনান ৷ একজন সাধারণ শিক্ষিত মানুষ ৷ বর্তমানে তার আলোচনা ভাসছে ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় ৷ তার এক বক্তব্যে দেখা গেছে কুরআন অবমাননা করতে ৷ তিনি বলেছেন, না বুঝে কুরআন পড়লে কোন লাভ নেই ৷ তাই আজকের আর্টিকেলের বিষয় হলো, কুরআন তেলাওয়াতের ফযিলত ৷
কুরআনের প্রতিটি আয়াতে যেমন রয়েছে বিশ্বমানবতার হেদায়াত ও মুক্তির বার্তা তেমনি কুরআন তিলাওয়াতে রয়ে গেছে বিশ্বাসীদের জন্য অফুরন্ত সওয়াব ও পুরস্কারের ঘোষণা। নিম্নে কুরআন তেলাওয়াতের কিছু ফযিলত তুলে ধরা হল ৷
মহানবী (সা.) বলেন,
من قرأ حرفًا من كتابِ اللهِ فله به حسنةٌ، والحسنةُ بعشرِ أمثالِها لا أقولُ (الـم) حرفٌ ولكنْ (ألفٌ) حرفٌ و(لامٌ) حرفٌ و(ميمٌ) حرفٌ
অর্থাৎ যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব থেকে একটি অক্ষর তিলাওয়াত করবে, বিনিময়ে সে একটি নেকি পাবে, আর একটি নেকির বদলা হবে দশগুণ, এ কথা বলছি না যে, আলিফ-লাম-মিম, একটি অক্ষর বরং আলিফ একটি অক্ষর, লাম একটি অক্ষর, মিম একটি অক্ষর (তিরমিজি-২৯১)।
সুতরাং যদি কেউ অর্থ না বুঝে শুধু তেলাওয়াত করে তাতেও প্রতিটি হরফ উচ্চারণের কারনে ১০ টি করে নেকি লাভ করবে ৷
আবু উমামা বাহেলী রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি,
اقْرَءُوا الْقُرْآنَ فَإِنَّهُ يَأْتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ شَفِيعًا لِأَصْحَابِهِ
অর্থঃ তোমরা কুরআন তিলাওয়াত কর, কারণ, কুরআন কেয়ামতের দিন তিলাওয়াতকারীর জন্য সুপারিশ করবে।[মুসলিম]
আরও পড়ুন → ইংরেজি ভাষা শেখা হারাম ফতোয়াঃ একটি ইতিহাস বিকৃতি
আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
مَا اجْتَمَعَ قَوْمٌ فِي بَيْتٍ مِنْ بُيُوتِ اللَّهِ يَتْلُونَ كِتَابَ اللَّهِ وَيَتَدَارَسُونَهُ بَيْنَهُمْ إِلَّا نَزَلَتْ عَلَيْهِمْ السَّكِينَةُ وَغَشِيَتْهُمْ الرَّحْمَةُ وَحَفَّتْهُمْ الْمَلَائِكَةُ وَذَكَرَهُمْ اللَّهُ فِيمَنْ عِنْدَهُ
অর্থঃ যে কোন সম্প্রদায় আল্লাহর কোন ঘরে একত্রিত হয়ে কুরআন তিলাওয়াত করে এবং নিজদের মাঝে তা পঠন ও পাঠন করে, তাদের উপর শান্তি অবতীর্ণ হয়, আল্লাহর রহমত তাদের ঢেকে রাখে, ফেরেশতারা তাদের বেষ্টন করে রাখে এবং আল্লাহ তাআলা নিকটস্থ ফেরেশতাদের সঙ্গে তাদের ব্যাপারে আলোচনা করেন।[মুসলিম]
উম্মুল মোমেনিন আয়েশা সিদ্দিকা রাদিআল্লাহু আনহার সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
الْمَاهِرُ بِالْقُرْآنِ مَعَ السَّفَرَةِ الْكِرَامِ الْبَرَرَةِ وَالَّذِي يَقْرَأُ الْقُرْآنَ وَيَتَتَعْتَعُ فِيهِ وَهُوَ عَلَيْهِ شَاقٌّ لَهُ أَجْرَانِ- أحدهما على التلاوة والثاني على مشقتها على القاري
অর্থঃ আল কুরআনে দক্ষ ও পণ্ডিত ব্যক্তি সম্মানিত পুণ্যবান ফেরেশতাদের সাথে থাকবে। যে ব্যক্তি কুরআন আটকে আটকে তিলাওয়াত করে এবং তা তার জন্য কষ্টকর হয়, তার জন্য দু’টি প্রতিদান রয়েছে। প্রথমটি, তিলাওয়াতের প্রতিদান, দ্বিতীয়টি কষ্টের প্রতিদান। [বুখারী ও মুসলিম ]
আরও পড়ুন →আলেমদের মাওলানা বলা কি হারাম?
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন,
تَعَاهَدُوا هَذَا الْقُرْآنَ فَوَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَهُوَ أَشَدُّ تَفَلُّتًا مِنْ الْإِبِلِ فِي عُقُلِهَا
অর্থঃ তোমরা কুরআনের যথাযথ যত্ন নাও, তা মুখস্থ ও সংরক্ষণ কর। ঐ সত্তার শপথ! যার হাতে আমার জীবন, অবশ্যই উট তার রশি থেকে যেমন দ্রুত পালিয়ে যায়, তার চেয়েও আরো তীব্র বেগে পালানোর বস্তু এ কুরআন। [বুখারী ও মুসলিম]
লেখকঃ মুফতি রেজাউল করিম