ফিশিং লিঙ্ক কি -ইন্টারনেটের সাথে যারা সংযুক্ত রয়েছেন তাদের কাছে অতি পরিচিত একটি নাম হচ্ছে ফিশিং লিংক। এই ফিশিং লিংক না চিনে ক্লিক করার মাধ্যমে ব্যাক্তিগত তথ্য চলে যায় হ্যাকারদের হাতে।
ইন্টারনেটের প্রচার এবং প্রসার এত বেশী রয়েছে যে, প্রতিটি মানুষের হাতের মধ্যেই পুরো বিশ্ব চলে এসেছে কিন্তু এর মধ্যে রয়েছে সুবিধা এবং অসুবিধা কারণ ব্লাক হ্য্যট হ্যাকারদের কবলে রয়েছে পুরো ইন্টারনেট দুনিয়া।
আরও পড়ুনঃ ইনভেস্ট ছাড়া টাকা ইনকাম করার ৫টি উপায়
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে হ্যাকারদের তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। সাধারণ একটি ফিশিং লিংকের মাধ্যমে তারা মানুষের ব্যাক্তিগত তথ্য থেকে ব্যাংক একাউন্ট সমস্ত কিছু হ্যাক করার মাধ্যমে প্রতারণা করে থাকে।
তাই আজকের এই আর্টিকেলে ফিশিং লিংক কি এবং কিভাবে হ্যাকারদের তৈরি ফিশিং লিংক চেনার মাধ্যমে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা যাবে সেই বিষয় নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে। নিজেকে ইন্টারনেট জগতে সুরক্ষিত রাখার জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি পুরোটা পড়ুন।
ফিশিং লিঙ্ক কি?
ফিশিং লিংক বলতে এমন এক ধরণের লিংকে বোঝানো হয় যেখানে, বিভিন্ন পরিচিত ওয়েবসাইটের মত ওয়েবসাইট তৈরি করে সেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যে লিংক জেনারেট হয় সেই লিংকের মাধ্যমে মানুষের তথ্য চুরি করা হয়ে থাকে এবং এই ভূয়া প্রতারণার জন্য যে লিংক তৈরি হয় থাকেই ফিশিং লিংক বলে।
বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেইল, মেসেজকে ব্যবহার করে এক ধরণের লিংক মানুষের মোবাইল ফোনে পাঠানো হয়ে থাকে এবং লিংক গুলোতে বিশেষ কিছু অফার দেয়া হয় যার ফলে অনেকেই না বুঝে লোভের কারণে লিংকে ক্লিক করে দেয় এবং সাথে সাথে তার মোবাইলে থাকা সমস্ত তথ্য চলে যায় হ্যাকারদের হাতে।
আরও পড়ুনঃ লাইফ টাইম আয় করুন সহজ এফিলিয়েট থেকে
হ্যাকার চক্র এই সমস্ত তথ্যকে কাজে লাগিয়ে ব্যাক্তিগত তথ্য চুরি করা থেকে শুরু করে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, ব্যাক্তিগত ছবি,তথ্য,ভিডিও দিয়ে মোবাইল ব্যবহারকারী থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে থাকে।
বিশেষ করে ফিশিং লিংকের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে ফেসবুক, লিংকডিন, দারাজ বা অন্যান্য ওয়েবসাইটের মত পেজ ওপেন হয় যেখানে অ্যাকাউন্ট তৈরি করা থেকে শুরু করে লগিন করার মত অপশন থাকে। কেও যদি এই সমস্ত ফিশিং ওয়েবসাইটে তার তথ্য গুলো দিয়ে সাবমিট করে তাহলে তার ডিভাস হোক সেটি মোবাইল অথবা কম্পিউটার তার মধ্যে এক ধরণের ম্যালওয়ার ভাইরাস প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয় এবং তখন সেই ডিভাইসের এক্সেস চলে যায় হ্যাকারদের হাতে।
আপনি চাইলেই স্যাম মেসেজ এবং ফিশিং লিংক থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করার ক্ষেত্রে নিজেকে অনেক বেশী নিরাপদ রাখতে পারবেন। নিম্নে দেয়া বিষয় গুলো ফলো করার মাধ্যমে ফিশিং লিংক থেকে এবং হ্যাকার থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন।
হ্যাকারদের বানানো ফিশিং লিঙ্ক চিনবেন যেভাবে
হ্যাকারদের তৈরি করা ফিশিং লিংক চেনার বিশেষ কিছু উপায় রয়েছে যে গুলো ফলো করার মাধ্যমে অতি সহজেই ফিশিং লিংক চেনা যায়। একটু সময় নিয়ে বিষয় গুলো ফলো করতে থাকুন, আশা করা যাচ্ছে যে, আপনি সহজেই লিংক গুলো চিনতে পারবেন।
- যে মাধ্যম থেকে মেসেজ পাঠানো হয়েছে সেটি পরিচিত কিনা দেখেনিন বিশেষ করে মোবাইলে আসা মেইল অ্যাকাউন্ট ভালোভাবে খেয়াল রাখুন
- মেসেজে যে লিংক পাঠানো হয় সেটি কোন পরিচিত লিংক কিনা সেতি চেক করুন ও সেই সাথে দেখুন লিংকের সাথে https:// যুক্ত আছে কিনা?
- ওয়েবসাইটের লিংকের মধ্যে ডোমেইন নামের বানান ঠিক আছে কিনা সেটি খেয়াল করতে হবে
- আপনার ফোনে আসা মেসেজটি কেও ফরওয়ার্ড করেছে কিনা সেটি দেখেনিন কারণ বেশীরভাগ ফিশিং লিংক গুলো অন্যদের দ্বারা ফরওয়ার্ড হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে পরিচিতদের থেকে আসা মেসেজের লিংক গুলোতে ক্লিক করার পূর্বে যাচাই বাছাই করেনিন
- মেসেজে আসা লিংকের মধ্যে বানান ঠিক আছে কিনা সেটি পরিক্ষা করেনিন কারণ বেশীরভাগ ভূয়া এবং ফিশিং লিংকের বানানে ভূল থাকে
- যদিও লিংকে প্রবেশ করে থাকেন তাহলে দেখবেন সেই ওয়েবসাইটে লগিন পেজ, অ্যাকাউন্ট তৈরি করার পেজ বা এমন একটি ফরম থাকবে যেখানে নিজের তথ্য গুলো সাবমিট করতে হয় এমন কোন ওয়েবসাইট দেখলেই বুঝতে হবে সেটি ফিশিং লিংক ওয়েবসাইট
- বিশেষ করে বিজ্ঞাপন বা অ্যাড গুলোতে ক্লিক করার সময় ভেবে ক্লিক করবেন কারণ কিছু সোর্সে হ্যাকাররা অ্যাড এর মাধ্যমে ফিশিং লিংক ছড়িয়ে দেয় বিশেষ করে পাইরেটেড অ্যাপ এবং সফটওয়্যার গুলোর মধ্যে এমন হতে পারে
এগুলো ছিল ফিশিং লিংক চেনার জন্য বিশেষ কিছু উপায় এবং কৌশল। নিজেকে হ্যাকারদের দেয়া ফিশিং লিংক থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য অপরিচিত যেকোনো লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন। বিশেষ করে যে সমস্ত মেসেজ গুলোতে টাকা বা অন্য কিছু অফার প্রদান করে থাকে সেই সমস্ত মেসেজের লিংক থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখলেই ফিশিং লিংক থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা যাবে।