আজ ২৭ আগস্ট৷ বাংলা ১৩৮৩ সালের আজকের এই দিনে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইন্তেকাল করেন৷ আজ তার ৪৪ তম মৃত্যুবার্ষিকী৷ তার স্মরণে আজকের এই লেখা৷
হঠাৎ কবি হতে মন চাইছে! আবার ভাবলাম হবো না! কারণ, কবি হতে গেলে নাকি লাবণ্যময়ী ললনাদের অথৈ প্রেম সাগরে ডুব দিতে হয়! যা আমার পক্ষে অসম্ভব! আবার নাকি দু' চার বার ছ্যাকাও খেতে হয়! শুনেছি কবি নজরুল নাকি বার বার প্রেমে পড়েছেন!আবার ছ্যাকাও খেয়েছেন!তাই আমরা এত প্রেমের কবিতা ও গান পেয়েছি!! এক সুন্দরী নারীকে দেখে কবি গেয়ে উঠলেন,
" তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয় সেকি মোর অপরাধ? চাঁদেরে হেরিয়া কাঁদে চকোরিনী বলে না তো কিছু চাঁদ"!
আরো পড়ুন→SEO ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল কিভাবে লিখবেন?
আচ্ছা, কেউ যদি তোমার বিরহ- বেদনায় আঁখি দ্বয়ের তপ্ত অশ্রু ও নোনা জল বিসর্জন দেয়! গন্ডদেশ বেয়ে ঝরে চাপা কান্নার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলের ফোটা! ক্রন্দন করতে করতে একসময় হারিয়ে ফেলে মুখের ভাষা- জ্ঞান! হয়ে যায় নিথর নিস্তব্ধ! ঠিক পাথরসম!কেমন হয় তখন তোমার অনুভূতি? তুমি কি আনন্দের বন্যায় সাঁতার কাটতে থাক? নাকি তার ব্যাথায় ব্যথিত হয়ে নিজের অজান্তেই দুফোটা জল গড়িয়ে পড়ে বক্ষে?
কবি নজরুল!বিরহের কবি! প্রেমের কবি! লিখেছেন অনেক কবিতা! অনেক গান! কোন রুপবতী ললনা তার বিরহে কাঁদলে কেমন হত তার মনের অবস্থা! এক কবিতায় ফুটে উঠেছে তার আবেগ অনুভূতি!
" মালা যখন গাঁথ তখন পাওয়ার সাধ যে জাগে, মোর বিরহে কাঁদ যখন আর ভালো লাগে"
( নিজের কথা কি বলব? আমি হলে প্রেয়সীর কাঁদা দেখলে নিজেই কাঁদতে শুরু করতাম)
প্রেমিকের শত আশা- আকাংখা, কামনা- বাসনা, জল্পনা- কল্পনা অভিপ্রায়- ইচ্ছা থাকে প্রেমিকাকে কাছে পাওয়ার! আরও নিকটে পাওয়ার!দ্রুততম সময়ে তাকে বুকে টেনে নেওয়ার!জড়িয়ে নেওয়ার! তার রেশমী আচল তলে নিজেকে ঢেকে নেওয়ার! অথচ নজরুল এটা বুঝল না!ও বলল,
"পেয়ে তোমায় যদি হারাই দূরে দূরে থাকি গো তাই"
(নজরুল যদি আজ বেঁচে থাকত কোনো সুন্দরী তো দূরের কথা কোনো কালনাগিনীও ওর প্রেমে পড়ত না!)
কবি কখনো তার লাবন্যময়ী ললনার প্রেমে মজে খোপায় - বেণীতে পড়িয়েছেন নীল আসমানের তারা! কর্ণে দুলিয়েছেন চাঁদের দুল!কিভাবে যে আসমানে তারা আর চাঁদ আনলেন বুঝলাম না! যাই হোক সবতো আর পেতে হয় না!আবেগ বলেতো একটা কথা আছে! কবি গাইলেন,
"মোর প্রিয়া হবে এসো রাণী দেব খোঁপায় তারার ফুল, কর্ণে দোলাব তৃতীয়া তিথির চৈতি চাঁদের দুল"
(আমি চাই না আমার কল্পনার মানুষের কর্ণ ছিড়ে যাক! তাই বেণীতে তারার ফুল আর কর্ণে চাঁদের দুল পড়ানোর কোনো ইচ্ছেই আমার নেই)
আরো পড়ুন→নামের আগে মুহাম্মাদ যুক্ত করার বিধান কি?
এই কলি যুগে এসেও কারো চুল দেখতে পেলাম না! অথচ বহু পূর্বেই নাকি নজরুলের দিল ফেসে গিয়েছিল কোন যুবতী পরমার চুলের খোঁপায়!
" আলগা করো গো খোঁপার বাধন;দিল ওহী মেরা ফাস গ্যায়ী"
( দিল ফাসানোর জন্য কবে যে একটা বড় মাপের খোঁপা পাব!)
আপনি আমি তাজমহলের সুন্দর্য অবলকন করি! আর ভাবি এটা শাহজাহান মমতাজের স্মৃতি হিসেবে তৈরী করেছেন! কিন্তু নজরুল তাজমহলের পাথরের অন্তরও নাকি দেখতেন ! শুধু তাই নয় পাথরের অন্তরে কে আছে আর বাহিরে কে আছে তাও জানতেন! কি বিশ্বাস হচ্ছে না? তাহলে দেখুন নজরুলের কবিতা-
" তাজমহলের পাথর দেখেছ,দেখিয়াছ কি তার প্রাণ অন্তরে তার মমতাজ নারী বাহিরেতে শাহজাহান"
( আগেকার দিনে পাথরের অন্তরেও মানুষ বসবাস ছিল! অথচ আমি মানুষ! আমার অন্তরে মানুষ তো দূরের কথা একটা পাথরও নেই)
আরো পড়ুন→বিতর নামায ১ রাকাত নাকি তিন রাকাত?
রাগ- গোস্বা অভিমান অভিযোগ সবারই আছে! ছিলো কবি নজরুলেরও!এ ভাব ফুটে উঠেছে তার কবিতার শব্দে শব্দে!দেখুন কত রাগ,
" যারে হাত দিয়ে মালা দিতে পার নাই, কেন মনে রাখ তারে? ভুলে যাও তারে ভুলে যাও একেবারে"!
( হায় আফসোস!যার উপর রাগ করবো তাকে হারিকেন জ্বালাইয়াও পাচ্ছি না)
আচ্ছা বলুন তো? আপনি মরলে কি আপনার সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ মরবে না? নিশ্চয় হ্যা বলেবেন! কিন্তু কবিরা মরলে নাকি তাদের নয়ন মরে না! আমি বলছি না বলছে কবি নজরুল!শুনুন পাগলের কথা-
" বারে বারে মোর জীবন প্রদীপ নিভিয়া গিয়াছে প্রিয়া! আমি মরিয়াছি,মরেনি নয়ন,দেখ প্রিয়তমা চাহিহা"!
( হায়রে বস্তাভরা আবেগ)
আরো পড়ুন→বিতর নামায আদায়ের পদ্ধতি
আজ কালকের মত নাকি কবিরাও ছ্যাকা খেত! কবি নজরুল তো ছ্যাকা খেয়ে শরম লজ্জার মাথা খেয়ে প্রেমিকাকে বলেই ফেলল,
" পথ চলিতে যদি চকিতে দেখা হয় পরাণ প্রিয়! চাহিতে যেমন আগের দিনে তেমনি মদির চোখে চাহিও!তোমার প্রিয় পাশে যদি রয়, মোরও প্রিয় সে, করিও না ভয়,
কহিব তাহারে আমার প্রিয়ারে আমারও অধিক ভাল বাসিও"!!
(হায়রে নজরুল! বর্তমান যামানা হলে, যদি সে জানতে পারত তার বউর সাথে তোর ইটিশ পিটিশ ছিল!তাহলে কমপক্ষে শতবার কান ধরে উঠ বস করাত!!!)