HMREZAULISLAM.BLOGSPOT.COM |
অবসর (ইংরেজি: Leisure) ব্যক্তির নির্ধারিত মুক্ত সময় অর্থাৎ যখন যা খুশী মনে চায়, করে নিয়ে যাওয়া যায়। অর্থাৎ, ব্যবসা, কর্মজীবন, গৃহস্থালী কাজ থেকে দূরে থাকার অলস সময়টুকুই অবসর সময় নামে বিবেচিত হয়। এছাড়াও, খাওয়া-দাওয়া, ঘুমের পূর্ববর্তী কিংবা পরবর্তী সময়কালও অবসর সময় নামে গণ্য করা হয়।
দুটি নেয়ামতের সুফল লাভে অধিকাংশ মানুষ ব্যর্থ৷
রাসুল (সা.) বলেন,
نعمتان مغبون فيهما كثير من الناس الصحة والفراغ
অর্থাৎ এমন দুটি নেয়ামত রয়েছে, যার সুফল লাভে অধিকাংশ মানুষই ব্যর্থ হয় সুস্থতা ও অবসর।[বুখারী, হাদীস নং ৬৪১২]
তাই আমাদের উচিৎ এ অবসর টাইমকে কাজে লাগানো ৷যেন আমরা ব্যর্থ না হয়ে সফল হতে পারি ৷ মনে রাখা উচিৎ আপনি কিছু করুন আর না করুন সময় ফুরিয়ে যাবে টাইম শেষ হয়ে যাবে ৷ ঠিক নদীর স্রোতের মত আপনার জন্য ওয়েট করবে না ৷
আরো পড়ুুন >> করোনা পরিস্থিতিতে জামাতের নামাজে এক মুসল্লি অপর মুসল্লি থেকে দূরত্বে দাঁড়াতে পারবে কিনা?<<
অনেকেই ভাবছেন, কী করবো এ অবসরে? বা কী করা উচিৎ আমার জন্য? মনে রাখবেন, ভালো কাজ করলেও সময় কেঁটে যাবে খারাপ কাজ করলেও টাইম পাস হয়ে যাবে ৷ তবে ভাবার বিষয় হলো, বর্তমান সিচুয়েশন অনুযায়ী কী করা দরকার?৷ এরই একটি ধারনা দেয়া হয়েছে এ প্রবন্ধে ৷
আপনি আমি যা করতে পারি......
১৷ কুরআন তেলাওয়াত জানলে তেলাওয়া করুন৷ কুরআনই হতে পারে আপনার হোম কোয়ারেন্টাইনের উত্তম বন্ধু৷ এই অবসর সময়ে কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অর্জন করতে পারেন আল্লাহর সান্বিধ্য৷ আমল নামায় লিপিবদ্ধ করাতে পারেন অসংখ্য অগণিত নেকি৷রাসূল (সা.) বলেন,
من قرأ حرفا من كتاب الله فله به حسنة، والحسنة بعشر أمثالها، لا أقول: ألم حرف؛ ولكن ألف حرف , ولام حرف، وميم حرف
‘‘যে ব্যক্তি কুরআনের একটি হরফ পাঠ করে, তাকে একটি নেকি প্রদান করা হয়। প্রতিটি নেকি দশটি নেকির সমান। আমি বলি না যে, আলিফ-লাম-মীম একটি হরফ। বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ, মীম একটি হরফ।’’
[সুনান আত-তিরমিযি:২৯১০]
কুরআন কে বানাতে পারেন আপনার জন্য সুপারিশ কারী৷ কোরান পাঠকারীর জন্য কেয়ামতে সুপারিশ করবেন ৷ আবু উমামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
اقْرَءُوا الْقُرْآنَ فَإِنَّهُ يَأْتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ شَفِيعًا لِأَصْحَابِهِ
অর্থ:‘তোমরা কুরআন তিলাওয়াত কর, কারণ, কুরআন কেয়ামতের দিন তিলাওয়াতকারীর জন্য সুপারিশ করবে’ [মুসলিম: ১৯১০]।
২৷ কুরআনের অনুবাদ পড়ুন৷ বিশেষ করে ছোট ছোট সূরাগুলোর অনুবাদ৷ যেগুলো নামাযে তেলাওয়াত করা হয়৷ অনুবাদ জানা থাকলে নামাযে আপনি অন্যরকম মজা স্বাধ পাবেন৷ অনুবাদ পড়ার জন্য বিভিন্ন অ্যাপ রয়েছে৷ সেগুলো প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করে এ অবসর সময়ে পড়তে পারেন৷
৩৷ সকাল সন্ধ্যার সহীহ দোয়াগুলো মুখস্ত করতে পারেন৷ বিশেষ করে বালা মুসিবত, বিপদ আপোদ সংক্রান্ত ৷ এবং সেগুলো নিয়মিত আমল করতে পারেন হোম কোয়ারান্টাইনে বসে৷
৪৷ নির্ভরযোগ্য কোন হাদীসের কিতাব অধ্যায়ন করতে পারেন ৷ এ ক্ষেত্রে আমি সাজেস্ট করবো ইমাম নববীর 'রিয়াযুস সালেহীন" অধ্যায়ন করতে৷ কিতাবটি প্লে স্টোরেও পাওয়া যাবে৷
আরো পড়ুুন >>ইসলামের দৃষ্টিতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার কি বৈধ?>>
৫৷ পড়তে পারে রাসূল এর জীবনী বিষয়ক কোন সিরাত গ্রন্থ ৷ এই অবসরে জেনে নিতে পারের রাসূল এর জীবনাচার ৷ আমি বলবো "আর রাহীকুল মাখতুম" পড়তে৷ এ কিতাবটিও প্লে স্টোরে পাওয়া যাবে৷
৬৷ স্ত্রীকে সময় দিন ৷ রান্নার কাজে স্ত্রীকে হেল্প করুন ৷ তার সাথে করুন রস রহস্য৷ কোয়ারেন্টাইনে যে লং টাইম পাচ্ছেন এত সময় হয়তো অতিতে কোন দিন পাননি৷ সুতরাং সময়কে আনন্দময় করে তুলুন৷
৭৷ ঘরে বসে বন্ধু-বান্ধব, আত্তীয়-সজন ও পরিচিতজনদের খোঁজ-খবর নিতে পারেন। এতে করে অশেষ সওয়াব হাসিল হবে।
৮৷ নফল রোজা রাখার অভ্যাস করা যেতে পারে। বিশেষ করে প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার যা নবী সঃ এর সুন্নত। আর এতে প্রচুর সওয়াব নিহিত।
বিশেষ করে এখন শাবান মাস চলমান ৷ রাসূল সা. এমাসে যে পরিমাণ রোযা রাখতেন রমযান ছাড়া অন্য মাসে এ পরিমাণ রোযা রাখতেন না৷
আরো পড়ুুন >> করোনা: মসজিদে নামায বন্ধ রাখার শরয়ী বিধান<<
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা করুন৷