HMREZAULISLAM.BLOGSPOT.COM |
প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য এই প্রথম দূরত্ব বজায় রেখে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জুম্মার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিগণ। এর আগে, কখনও এরকম দূরত্ব বজায় রাখেননি কেউ। এমনকি করোনা প্রতিরোধে সারাদেশে অঘোষিত লকডাউন চলাকালেও মুসল্লিরা এমন দূরত্ব রেখে নামাজ আদায় করেননি।
ইতপূর্বে ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনসহ বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশে দূরত্ব বজায় রেখে নামাজে দাঁড়ানোর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায় ৷
তাই অনেকের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতিতে মসজিদে নামাজের জামাতে এক মুসল্লি অপর মুসল্লি থেকে দূরত্বে দাঁড়াতে পারবে কিনা?
প্রথম কথা হলো, জামাতের সহিত নামায আদায়ের সময় মুসল্লিগন একে অপরের সাথে মিলে, ফাঁকা বন্ধ করে দাঁড়ানো সুন্নত ৷ দুজন মুসল্লির মাঝে একজন দাঁড়াতে পারে এ পরিমান ফাঁকা রাখা নিয়ম ও সুন্নত পরিপন্থী৷ কেননা হাদিস শরীফে এসেছে।
عن عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ مَنْ سَدّ فُرْجَةً فِى صَفٍّ رَفَعَهُ اللهُ بِهَا دَرَجَةً وَ بَنٰى لَهُ بَيْتًا فِي الْجَنّةِ.
অর্থাৎ আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কাতারের মধ্যকার ফাঁক বন্ধ করবে, এর বিনিময়ে আল্লাহ তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেবেন এবং জান্নাতে তার জন্য একটি ঘর নির্মাণ করে দিবেন।
[তবারানী, হাদীস ৫৭৯৫; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, হাদীস ৩৮২৪]
এই হাদীসের আলোকে বলা যায় যে, স্বাভাবিক অবস্থায় দুজন মুসল্লির মাঝে একজন দাঁড়াতে পারে এ পরিমান ফাঁকা রাখা নিয়ম ও সুন্নত পরিপন্থী৷
দ্বিতীয়ত, আইম্মায়ে আরবায়ার মতে ফাঁকা বন্ধ করে দাঁড়ানো নামায সহিহ হওয়ার জন্য শর্ত কিংবা রুকন নয় ৷ তাই সর্বসম্মতিক্রমে ফাঁকা রেখে নামায পড়ে ফেললে নামায হয়ে যাবে ৷ কিন্তু নামায মাকরুহ হবে৷
আর ফকিহগণের নিকট এটি একটি স্বতঃসিদ্ধ নিয়ম যে, প্রয়োজনে ওযরের কারণে কারাহাত বা মাকরুহ কাজ মাকরুহ থাকে না ৷ তা বৈধ হয়ে যায় ৷ অতএব বর্তমান পরিস্থিতিতে করোনা সংক্রমণের শংকায় মুসল্লিগন একে অপর থেকে ডাক্তার ও স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক নির্দেশিত দূরত্বে দাঁড়াতে পারবে ৷ তাতে নামাযের কোনো ক্ষতি হবে না।
[ফতহুল কাদীর, ১/৩৬০-৬১; হাশিয়াতুল খারাশী, ২/৩৩; নেহায়াতুল মিনহাজ, ২/১৯৫]
আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন ৷