বিতর নামায আদায়ের পদ্ধতি


বিতর নামায আদায়ের পদ্ধতি,বিতর নামায কত রাকাত ও সহীহ নিয়ম কোনটি?,দোয়ায়ে কুনূত আহলে হাদীস,১ রাকাত বিতর পড়ার নিয়ম,বিতর নামাযের নিয়ম ও নিয়ত
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাহ ও সাহাবায়ে কেরামের আমলের আলোকে হানাফী মাযহাবের ফতোয়া হলো, বিতর নামাযে দোয়ায়ে কুনূত পড়া ওয়াজিব৷
কিন্তু এর বিপরিতে বিতর সালাতে দোয়ায় কুনূত পড়া সম্পর্কে এক ব্যক্তির প্রশ্নের উত্তরে আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ সাহেব বলেন,
"বিতর পড়লেই দোয়ায় কুনূত পড়তে হয় এ হিসেব ঠিক নয়৷ কেউ যদি কোনো দিন  দোয়ায়ে কুনূত পড়তে চায় তাহলে বিতর সালাতে পড়বে৷ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়া সাল্লাম দোয়ায় কুনূত পড়তেন না৷" 
এবার বলবো তারই ঘরানার এক ব্যক্তির আলোচনার অংশবিশেষ৷ বিতর নামায প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে স্যার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর সাহেব বলেন,
"কুনূত না পড়লে কি হবে এর চেয়ে আমাদের অনুভব করতে হবে পড়লে কি হবে? আমরা মূলত সালাত আদায় করি আল্লাহর কাছে কিছু চাওয়ার জন্য৷ আর দোয়ায়ে কুনূতের মধ্যে আমরা ভালো ভালো জিনিষগুলো আল্লাহর নিকট চাই৷
আমরা বুঝি না যে, আমরা চাওয়ার সুযোগ কেন ছাড়বো? আমরা কুনূতের মাধ্যমে আল্লাহর নিকট দোয়া করবো৷ আর কুনূত পড়ার হুকুম সম্পর্কে ফুকাহাদের ইখতেলাফ রয়েছে৷ আমাদের দেশের ফুকাহাদের মতে ওয়াজিব৷ সুতরাং অপারোগ না হলে আমরা কুনূত ছাড়বো না ৷ সকলেই পড়বো৷"


শুধু তাই নয়, আরব বিশ্বের প্রখ্যাত আলেম শায়খ বিন বায রহিমাহুল্লাহ বলেছেন৷ বিতর সালাতে দোয়ায়ে কুনূত পড়া সুন্নাহ সম্মত৷ সুতরাং কুনূত পড়া উচিৎ৷
প্রিয় পাঠক! উভয়ের প্রশ্নোত্তর এবং বিন বাযের ফতোয়া মিলিয়ে দেখুন কার উত্তরটি ভারসাম্যপূর্ণ? আপনারা ভালো করে পড়ে থাকলে বুঝতে পেরেছেন, আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের উত্তরে বিতর নামাযে দোয়ায় কুনূত না পড়ার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে৷ প্রশ্নকারী হয়তো আর দোয়ায় কুনুত পড়বে না৷ সে বঞ্চিত থাকবে অসংখ্য কল্যানকর দোয়া থেকে৷
এর অল্টানেটে আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর সাহেবের উত্তর ও বিন বাযের ফতোয়ার মাধ্যমে দর্শক শ্রোতারা বিতর সালাতে দোয়ায় কুনূত পড়তে উৎসাহিত হয়েছে ফিউচারেও হবে ইনশাআল্লাহ৷

আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের মিথ্যা দাবী: "রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়া সাল্লাম দোয়ায় কুনূত পড়তেন না৷"

একজন আহলে হাদীস শায়খ কীভাবে নিজের মতকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এমন নির্জলা মিথ্যা কথা বলতে পারে৷ অব্শ্য এমন মিথ্যা বলা , মানুষকে ধোকা দেওয়া তাদের চিরাচরিত অভ্যাস৷ এইতো আজোও দেখলাম ফেসবুক টাইমলাইনে একটি ভিডিও ভাসছে যেখানে আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ বলছে, "যদি কোটিপতিও কুরবানি না করে তাহলে গুনাহ হবে না৷" নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক৷
যাই হোক৷ পাঠক, আমরা এখন দেখি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিতর সালাতে দোয়ায় কুনূত পরেছে কি না? এবং এ ব্যাপারে সহীহ কোনো বর্ণনা আছে কি না? সাহাবায়ে কেরাম এর উপর আমল করেছেন কি না? যদি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিতর সালাতে দোয়ায় কুনূত পড়ে থাকেন আথবা সাহাবায়ে কেরাম থেকে এর ওপর আমল পাওয়া যায় তাহলে বুদ্ধিমানের কাজ হলো, আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের এ বক্তব্য থেকে ফিরে আসা৷ মানুষকে সঠিক ও নির্ভুল তথ্য ও ইনফরমেশন দেওয়া৷

১৷ আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন,
إن النبي صلى الله عليه وسلم قنت في الوتر قبل الركوع
অর্থাৎ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতর নামাযে রুকুর আগে কুনূত পড়তেন।
এ হাদীসের মন্তব্যে ইমাম দারা কুতনী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, 'এ হাদীসের একজন রাবী আবান ইবনে আইয়্যাশ৷ তিনি মাতরুক৷' অর্থাৎ তার বর্ণনা পরিত্যাজ্য৷ তবে এ হাদীসটি খতীব বাগদাদী রাহিমাহুল্লাহ তার কিতাব, "কিতাবুল কুনূত" এ আবান ইবনে আইয়্যাশ এর সনদ ব্যতীত বর্ণনা করেছেন৷
ইমাম তিরমিযি রাহিমাহুল্লাহ তার " কিতাবুল ইলাল" "বলেন, এ ছাড়াও অনেক মুহাদ্দীস এ হাদীসটি ইবরাহিম নাখায়ী আন আলকামা আন আব্দিল্লাহ ইবনে মাসউদ এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন৷" সুতরাং হাদীসটি দলীলযোগ্য৷
২৷ হযরত উবাই ইবনে কা’ব রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন,
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يوتر بثلاث ركعات … ويقنت قبل الركوع
অর্থাৎ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন রাকাত বিতর পড়তেন … এবং রুকুর আগে কুনূত পাঠ করতেন।
(নাসায়ী ১/২৪৮)
৩৷ ইবনে মাজার রেওয়ায়েতে আছে,
كان يوتر فيقنت قبل الركوع
অর্থাৎ তিনি বিতর পড়তেন এবং রুকুর আগে কুনূত পাঠ করতেন।
(ইবনে মাজাহ পৃ. ৮৪)
৪৷ আবু ইসহাক রাহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণিত, মাসরূক রাহিমাহুল্লাহ আসওয়াদ রাহিমাহুল্লাহ ও ইবনে মাসউদ রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর অন্য শাগরিদগণ বলেছেন,
وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ لا يَقْنُتُ إلا فِي الْوِتْرِوَكَانَ يَقْنُتُ قَبْلَ الرُّكُوعِ يُكَبِّرُ إِذَا فَرَغَ مِنْ قِرَاءَتِهِ حِينَ يَقْنُتُ
অর্থাৎ আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযিয়াল্লাহু আনহু শুধু বিতর নামাযে কুনূত পড়তেন আর তিনি কুনূত পড়তেন রুকুর আগে এবং কিরাআত সমাপ্ত হওয়ার পর কুনূত পড়ার সময় তাকবীর দিতেন।
(শরহু মুশকিলিল আছার ১১/৩৭৪  মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ২/৩০৭)
প্রিয় পাঠক! এ সকল হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, বিতর সালাতে দোয়ায়ে কুনূত পড়তে হবে৷

প্রিয় পাঠক! মিথ্যাবাদি আহলে হাদীসদের একটি খারাপ অভ্যাস হলো, তারা নবীজীর হাদীসকে গবেষণা, যাচাই বাছাই ও এনালাইসিস না করে বলে দিবে,
"এ হাদীস জাল, এ হাদীস যয়ীফ, এটা দূর্বল" এটা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে৷ এটা শিখেছে তাদের মতে তাদের হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস নাসিরুদ্দীন আলবানী থেকে৷ সে সহীহ কে যয়ীফ,  যয়ীফ কে সহীহ বলতে খুব পারঙ্গম৷ শুধু তাই নয়, সে রাসূলের সহীহ হাদীসকে জাল হাদীস বলেও রাসূলের হাদীসকে অস্বিকার করেছে৷ তার মত এত বড় ভুল তার পূর্বে কেউ করেনি৷
শাইখ নাছির উদ্দীন আলবানী সম্পর্কে তাদেরই এক সালাফী আলেম বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব আব্দুল্লাহ বিন বায রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
خطأ ظاهر ، لم يسبقه إليه أحد فيما نعلم من أهل العلم ، وهو مخالف للأحاديث الصحيحة
অর্থাৎ …. নাছির উদ্দীন আলবানী এমন প্রকাশ্য ভুল করেছেন যাহা আমাদের জানা মতে পূর্বের কোন আলেম এমনটি করেননি। তিনি আরো বলেন, আলবানী সাহেব ছহীহ হাদীস সমূহের বিরোধিতাকারী। (সালাসু রাসায়েল ফিসসালাত : ইবনে বাজ ১/২৮)
তিনি আরো বলেন,
قد يصحِّح بعض الأحاديث ويخطئ، وقد يضعِّف ويخطئ

অর্থাৎ কখনো তিনি ছহীহ হাদীসকে জয়ীফ/দূর্বল বলে ভুল করেন, আবার কখনো দূর্বল হাদীসকে তিনি ছহীহ বলে ভুল করেন।
(দরুস ইবনে বাজ : ১১/২৬, ২. মাজমুআয়ে ফতুয়া ইবনে বাজ : ২৫/৭১)
আরবের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস, অসংখ্য গ্রন্থের নির্ভরযোগ্য গবেষক, আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ আওয়ামা বলেন,
مع ان هذا الرجل ليس له من الشيوخ إلا شيخ واحد من علماء حلب بالإجازة لا بالتلقى والأخذ والمصاحبة والملازمة
অর্থাৎ এছাড়া এই ব্যক্তির তো কোন শিক্ষক নেই। সিরিয়ার হালবের জনৈক ব্যক্তি তাকে হাদীস চর্চার মাত্র অনুমতি দিয়েছেন। তবে তার কাছেও আলবানী নিয়মিতভাবে পড়া লেখা করেননি।
(আসারুল হাদীস, ৫১নং পৃষ্ঠা)
বিশ্ব বরেণ্য মুহাদ্দিস মাওলানা হাবীবুর রহমান আ’যমী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
 والله لا يعرف ما يعرف آحاد الطلبة الذين يشتغلون بدراسة الحديث فى عامة مدارسنا
অর্থাৎ আল্লাহর কসম! সেই শায়খ আলবানী হাদীস সম্পর্কে এতটুকু জ্ঞানও রাখে না, যা আমাদের সাধারণ মাদরাসাগুলোতে অধ্যয়নরত ছাত্ররা জানে।(الأبانى  شذوذه وأخطاؤه  এর ভূমিকা)
তার সম্পর্কে এই একই  কথা আরেকজন সমকালীন আলেম প্রসিদ্ধ মুহাক্কিক শায়েখ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রহিমাহুল্লাহও লিখেছেন,
وإنما أدى الألباني إلى هذا الشذوذ اعوجاج فهمه لبعض النصوص، لضعف معرفته بأصول الفقه، بل أصول الرواية والدراية أيضاً (خطبة الحاجة ليست سنة في مستهل الكتب المؤلفات، ص ৫২)
অর্থাৎ “কিছু নুসূসের ক্ষেত্রে তার স্থূলবুদ্ধি তাকে ‘শুযুয’ পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। এর কারণ হল, উসূলে ফিকহ বরং উসূলুর রিওয়ায়া ও দিরায়া সম্পর্কে পর্যাপ্ত জানাশোনা না থাকা।”
(خطبة الحاجة ليست سنة في مستهل الكتب المؤلفات، ص ৫২)

আরো পড়ুন সময়ের মূল্য

যাই হোক, আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ ও মতিউর রহমান মাদানীর দুটি বক্তব্য দেখলাম৷ তারা বলল, "হানাফিরা যে তিন রাকাত বিতর নামাযে দ্বিতীয় রাকাতে বসে তাশাহহুদ পড়ে এ ব্যাপারে কোনো যয়ীফ হাদীসও নেই৷"
প্রিয় পাঠক, এবার আমরা দেখবো আসলে এ ব্যাপারে কোনো সহীহ হাদীস বা সাহাবায়ে কেরামের আমল আছে কি না?
১৷ আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা  হতে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতরের দুই রাকাত শেষে সালাম ফেরাতেন না।
(সুনানে নাসায়ী ১/২৪৮; হাদীস ১৬৯৮; মুয়াত্তা মুহাম্মাদ ১৫১ (বাবুস সালাম ফিল বিতর) মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৪/৪৯৪, হাদীস ৬৯১২; সুনানে দারাকুতনী ২/৩২, হাদীস ১৫৬৫; সুনানে কুবরা বাইহাকী ৩/৩১)
২৷ এই হাদীসটি ইমাম হাকেম আবু আব্দুল্লাহ রাহিমাহুল্লাহ ও ‘মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন’ কিতাবে বর্ণনা করেছেন। তার আরবী পাঠ এই
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم لا يسلم في الركعتين الأوليين من الوتر
অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতরের প্রথম দুই রাকাতে সালাম ফেরাতেন না। ইমাম হাকেম (রহ.) তা বর্ণনা করার পর বলেন,
هذا حديث صحيح على شرط الشيخين
অর্থাৎ হাদীসটি বুখারী ও মুসলিমের শর মোতাবেক সহীহ। ইমাম শামসুদ্দীন যাহাবী রাহ. ‘তালখীসুল মুস্তাদরাক’-এ হাকেম রাহ.-এর সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন। -মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন ১/৩০৪, হাদীস ১১৮০
৩৷ সাদ ইবনে হিশাম রাহিমাহুল্লাহ এর রেওয়ায়াতটি আরও একটি সনদে বর্ণিত হয়েছে, যার আরবী পাঠ নিম্নরূপ,
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يوتر بثلاث لا يسلم إلا في آخرهن
অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন রাকাত বিতর পড়তেন এবং শুধু সর্বশেষ রাকাতে সালাম ফেরাতেন। হাকেম রাহিমাহুল্লাহ এই রেওয়ায়াতের পর লেখেন, আমীরুল মুমিনীন হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাযিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু ও এভাবে বিতর পড়তেন এবং তাঁর সূত্রে মদীনাবাসীগণ তা গ্রহণ করেছেন। 
(মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন ১/৩০৪, হাদীস ১১৮১)
এ সকল হাদীস দ্বারা তাদের মূর্খতাই প্রমাণিত হয়৷ এবং বোঝা যায় তাদের জ্ঞানের পরিধিও৷ আল্লাহ তাদের ফিতনা থেকে মুসলিম উম্মাহকে হেফাযত করুন৷

তাদের আরেকটি বক্তব্য হলো, "কুনূতের পূর্বে রফয়ে ইয়াদাইন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রমাণিত নয়৷"
আমরা এখন দেখবো আসলে এ ব্যাপারে কোনো বর্ণনা আছে কি না৷
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু৷ যিনি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সফর ও হযরের সঙ্গী৷ হযরত আবু মুসা আশয়ারী রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদকে রাসুলের পরিবারের সদস্য মনে করতেন৷ আই মিন আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ যত কাছ থেকে রাসূলের আমল দেখেছেন তা অন্য কেউ দেখেনি৷ এই আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু কিরাআত সমাপ্ত হওয়ার পর কুনূত পড়ার সময় তাকবীর দিতেন। 
১৷ আবু ইসহাক রাহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণিত, মাসরূক রাহিমাহুল্লাহ আসওয়াদ রাহিমাহুল্লাহ ও ইবনে মাসউদ রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর অন্য শাগরিদগণ বলেছেন,
وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ لا يَقْنُتُ إلا فِي الْوِتْرِوَكَانَ يَقْنُتُ قَبْلَ الرُّكُوعِ يُكَبِّرُ إِذَا فَرَغَ مِنْ قِرَاءَتِهِ حِينَ يَقْنُتُ
অর্থাৎ আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযিয়াল্লাহু আনহু শুধু বিতর নামাযে কুনূত পড়তেন আর তিনি কুনূত পড়তেন রুকুর আগে এবং কিরাআত সমাপ্ত হওয়ার পর কুনূত পড়ার সময় তাকবীর দিতেন।
(শরহু মুশকিলিল আছার ১১/৩৭৪  মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ২/৩০৭)
২৷ ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু কুনূতের সময় হাত ওঠাতেন৷
ইমাম বুখারী রহিমাহুল্লাহ জুয্‌উ রাফয়িল ইয়াদাইন এ উল্লেখ করেছেন,
عن أبي عثمان كان عمر رضي الله عنه يرفع يديه في القنوت
অর্থাৎ আবু উছমান বলেন, ‘উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু কুনূতে রাফয়ে ইয়াদাইন করতেন।’
(জুয্‌উ রাফয়িল ইয়াদাইন পৃ. ৬৮)
প্রিয় পাঠক! শুধু উমর রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুই নয় এমন আরো অনেক সাহাবায়ে কেরাম দোয়ায় কুনূতে দুই হাত উঠাতেন৷
৩৷ ইমাম বাইহাকী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করেছেন, 
إن عدداً من الصحابة – رضي الله عنهم رفعوا أيديهم في القنوت 
অর্থাৎ ‘নিশ্চয় সাহাবায়ে কেরামের অনেকেই কুনূতে রাফয়ে ইয়াদাইন করতেন।’ (আস সুনানুল কুবরা ২/২১১)

মুফতি রেজাউল করিম
মুহাদ্দিস, সুফফাহ মাদরাসা, জলিলপুর, মহেশপুর, ঝিনাইদহ (তরুণ লেখক ও গবেষক) 

আরো পড়ুন আমি সফল হব















সত্য প্রকাশ

আমার নামঃ মুফতি রেজাউল করিম। আমি একটি কওমী মাদরাসায় শিক্ষকতা করছি। পাশাপাশি এ ব্লগের সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। অনলাইন সম্পর্কে মোটামুটি জ্ঞান থাকায় সময় পেলে দ্বীন ইসলাম নিয়ে কিছু লেখার চেষ্টা করি। যেন অনলাইনেও মানুষ ইসলামি জ্ঞান অর্জন করতে পারে। আপনিও চাইলে এ ব্লগে লিখতে পারেন। মোবাইলঃ 01782-40 91 69

Please Select Embedded Mode For Blogger Comments

নবীনতর পূর্বতন