রমজানের হাদীস সমূহঃ ৫০ টি সহীহ হাদীস

প্রিয় ভিজিটর আশা করি ভালোই আছেন ৷ আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি ৷ চলছে মাহে রমজান ৷ রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের মাস ৷ আপনি হয়তো কোন মসজিদের ইমাম বা খতীব ৷ আর না হয় খুঁজছের রমজান বিষয়ক সহীহ হাদীস ৷ তাই আপনার জন্য নিয়ে এলাম এ ব্লগটি ৷ এখানে ৫০ টি সহীহ হাদীস আছে ৷ আশা করি উপকৃত হবেন ৷ 


 عن ابن عمر رضي الله عنهما عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «لا تصوموا حتى تروا الهلال ولا تفطروا حتى تروه فإن أغمي عليكم فاقدروا له

হযরত ইবনে ওমর রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু থেক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা (রমাযানের) চাঁদ না দেখে রোযা শুরু করবে না এবং চাঁদ (শাওয়াল মাসের চাঁদ) না দেখা পর্যন্ত ইফতারও করো না। আর আকাশ মেঘাছন্ন থাকলে ত্রিশদিন পূর্ণ কর। (বুখারী, ই.ফা. ২৩৬৫, ই.সে. ২৩৬৬)

 عن أبي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم «لا يتقدمن أحدكم رمضان بصوم يوم أو يومين، إلا أن يكون رجل كان يصوم صومه، فليصم ذلك اليوم»

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা রমজান মাসের একদিন বা দুই দিন পূর্ব থেকে রোজা রেখো না। তবে কারো যদি পূর্ব থেকেই নির্দিষ্ট কোনো দিন রোজা রাখার অভ্যাস থাকে তাহলে সে ওই দিন রোজা রাখতে পারে। (সহিহ বোখারি,১/১৫৬)

 عن عمَّار بن ياسر قال: "من صام يوم الذي يُشك فيه، فقد عصى أبا القاسم محمدًا صلى الله عليه وسلم"

হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসির রাঃ বলেন, মানুষের কাছে সংশয়পূর্ণ দিবসে যে ব্যক্তি রোজা পালন করবে, সে নিশ্চয় আবুল কাছেম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবাধ্যতায় লিপ্ত হল। ( তিরমিজি, ৬৮৬)

 عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «إذا جاء رمضان فتحت أبواب الجنة وغلقت أبواب النار وصفدت الشياطين» 

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন রমজান আসে তখন জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয় আর জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানদের আবদ্ধ করে রাখা হয়। (বুখারি, মুসলিম)

 عن أبي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إذا كان أول ليلة من شهر رمضان صفدت الشياطين، ومردة الجن، وغلقت أبواب النار، فلم يفتح منها باب، وفتحت أبواب الجنة، فلم يغلق منها باب، وينادي مناد: يا باغي الخير أقبل، ويا باغي الشر أقصر، ولله عتقاء من النار، وذلك كل ليلة»

হযরত আবু হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন রমযান মাসের প্রথম রাতের আগমন ঘটে, তখন দুষ্ট জ্বিন ও শয়তানদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়। জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয়, তার একটি দরজাও খোলা হয় না এবং জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়, তার একটি দরজাও বন্ধ করা হয় না। আর একজন ঘোষক ঘোষণা করতে থাকে-হে কল্যাণের প্রত্যাশী! অগ্রসর হও, হে অকল্যাণের প্রার্থী! থেমে যাও। আর আল্লাহ তাআলা এ মাসের প্রতি রাতে অসংখ্য জাহান্নামীকে মুক্তি দান করেন । [জামে আত তিরমিযি-৬৮২]

 عن أبي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «أتاكم رمضان شهر مبارك فرض الله عز وجل عليكم صيامه تفتح فيه أبواب السماء وتغلق فيه أبواب الجحيم وتغل فيه مردة الشياطين لله فيه ليلة خير من ألف شهر من حرم خيرها فقد حرم» 

হযরত আবু হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন রমযান মাসের আগন ঘটলো, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, তোমাদের নিকট বরকতময় মাস রমযান এসেছে। আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য এ মাসের রোযা ফরয করেছেন। এ মাসে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর শয়তানদেরকে শিকলে বন্দী করা হয়। এ মাসে এমন একটি রাত আছে, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। যে এর কল্যান থেকে বঞ্চিত হল, সে তো প্রকৃতপক্ষেই বঞ্চিত। [মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং-৭১৪৮,৮৯৯১,৯৪৯৭]

 عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يقول: «الصلوات الخمس والجمعة إلى الجمعة ورمضان إلى رمضان مكفرات ما بينهن إذا اجتنب الكبائر» 

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসূল (স:) বলেছেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে অন্য জুমা এবং এক রমজান থেকে আরেক রমজানের মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মুছে দেয়, যদি সে যদি কবিরা গোনাহ থেকে বেঁচে থাকে। তাই তওবাহ করলে সব গুনাহ মাফ করার এক সুবর্ণ সুযোগ এই রমজান মাস। [বুখারী ও মুসলিম]

 عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «من صام رمضان إيمانًا واحتسابًا غفر له ما تقدم من ذنبه، ومن قام ليلة القدر إيمانًا واحتسابًا غفر له ما تقدم من ذنبه» 

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসূল (স:) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রোজা রাখবে, তার পূর্ববর্তী গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। অনুরূপ যে তারাবি আদায় করবে তার পূর্ববর্তী গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। [বুখারী ও মুসলিম]

 عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «من قام رمضان إيمانًا واحتسابًا غفر له ما تقدم من ذنبه» 

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসূল (স:) বলেছেন ‘যে ব্যক্তি ইমানে সহিত সওয়াবের নিয়তে রমাদান মাসে সওম পালন করবে, তার অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। [বুখারি, প্রথম খণ্ড হাদিস: ৩৭]


আরোও পড়ুনঃ স্বপ্নদোষ হলে কি রোযা ভেঙ্গে যায়?


 عن عائشة رضي الله عنها أن رسول الله صلى الله عليه وسلم: "صلى في المسجد ذات ليلة في رمضان فصلى بصلاته ناس ثم صلى من القابلة فكثر الناس ثم اجتمعوا من الليلة الثالثة أو الرابعة فلم يخرج إليهم رسول الله فلما أصبح قال: «قد رأيت الذي صنعتم فلم يمنعني من الخروج إليكم إلا أني خشيت أن تفرض عليكم»"

হযরত আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) রামাদ্বান মাসের এক রাতে মসজিদে গমন করে নামায (তারাবীহ’র নামায) পড়লেন এবং অনেক সাহাবীও তাঁর সাথে নামাযে শামিল হলেন। সকালে সাহাবায়ে কিরাম এ বিষয়ে আলোচনা করলেন। ফলে পরবর্তী রাতে আরো অধিক সংখ্যক সাহাবী জমায়েত হলেন। তখন রাসূলে পাক (সা.) নামায আদায় করলেন, উপস্থিত সাহাবীগণও তাঁর সাথে নামায পড়লেন। এ দিনও সকাল হলে তারা এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করলেন। ফলে তৃতীয় রাতে মুসল্লির সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেল। ঐ রাতে রাসূল (সা.) নামায আদায় করলেন, তার সাথে সাহাবায়ে কিরামও নামায পড়লেন। চতুর্থ রাতে মুসল্লির সংখ্যা মসজিদের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশী হয়ে গেল। কিন্তু রাসূল (সা.) ফজরের নামাযের আগে মসজিদে আসলেন না। ফজরের নামায শেষে তিনি মুসল্লিদের দিকে ফিরলেন, আল্লাহর ওয়াহদানিয়াত ও আপন রিসালতের সাক্ষ্য দিলেন, অতঃপর বললেন, (হে আমার সাহাবীরা!) তোমাদের অবস্থা আমার নিকট গোপন ছিল না । তবে এ নামায তোমাদের উপর ফরয হয়ে যাবে অতঃপর তোমরা তা আদায় করতে পারবে না এ আশঙ্কায় আমি তোমাদের কাছে আসিনি।  [বুখারী, হাদীস নং ২০১২]

 عن أبي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «أفضل الصيام بعد شهر رمضان شهر الله المحرم، وأفضل الصلاة بعد الفريضة صلاة الليل» 

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রমজানের পর সর্বাধিক উত্তম রোজা হলো মহররম মাসের রোজা। আর ফরজের পরে সর্বাধিক উত্তম নামাজ হলো তাহাজ্জুদের নামাজ। (মুসলিম,১/৩৫৮)

عن ابن عمر رضي الله عنهما قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «بني الإسلام على خمس: شهادة أن لا إله إلا الله وأن محمدًا رسول الله، وإقام الصلاة، وإيتاء الزكاة، وحج البيت، وصوم رمضان» 

হযরত ইবনে ওমর রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু থেক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,, ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ বা মাবুদ নেই এবং হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল, নামাজ কায়েম করা, জাকাত আদায় করা, হজ করা ও রমজান মাসে রোজা পালন করা। [ বুখারী ও মুসলিম]

  عن أبي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «رغم أنف رجل ذكرت عنده فلم يصل علي، ورغم أنف رجل دخل عليه رمضان ثم انسلخ قبل أن يُغفر له، ورغم أنف رجل أدرك عنده أبواه الكبر فلم يدخلاه الجنة» 

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ধুলায় মিশে যাক ঐ ব্যক্তির নাক যার সম্মুখে আমার নাম মুবারক উপস্থাপিত হল অথচ সে আমার উপর দরূদ পেশ করল না, ধুলায় মিশে যাক ঐ ব্যক্তির নাক যার সামনে রমযান মাস উপস্থিত হল সে তা তার গুনাহ মাফ করা ব্যতিত অতিবাহিত হতে দিল, ধুলায় মিশে যাক ঐ ব্যক্তির নাক যার নিকট তার পিতামাতা বৃদ্ধাবস্থায় উপস্থিত অথচ সে তাদের হক আদায় করল না, অতঃপর তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবেনা । [জামে আত তিরমিযি-৩৫৪৫, মুসনাদে আহমদ-৭৪৫১, বুখারী আল আদাবুল মুফরাদ-৬৪৬]

عن سهل بن سعد الساعدي رضي الله عنهما قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إن في الجنة بابًا يقال له الريان، يدخل منه الصائمون يوم القيامة، لا يدخل معهم أحد غيرهم، يقال: أين الصائمون؟ فيدخلون منه، فإذا دخل آخرهم، أغلق فلم يدخل منه أحد» 

হযরত সাহল বিন সা’দ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, নিশ্চই জান্নাতে একটি দরজা আছে যার নাম রাইয়ান। কিয়ামত দিবসে সেখান দিয়ে সিয়াম পালনকারী প্রবেশ করবে। সে দরজা দিয়ে অন্য কেহ প্রবেশ করবে না। বলা হবে, সিয়াম পলনকারী কোথায়? তারা দাঁড়াবে, তারা ছাড়া আর কেউ প্রবেশ করবে না। তারা প্রবেশ করার পর দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। আর কেহ সে স্থান দিয়ে প্রবেশ করবে না । [সহীহ আল বুখারী,কিতাবুস সওম,হাদীস নং-১৮৯৬/১৭৯৭]

 عن أبي سعيد الخدري رضي الله عنه قال: سمعت النبي صلى الله عليه وسلم يقول: «من صام يومًا في سبيل الله، بعد الله وجهه عن النار سبعين خريفًا» 

হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় (শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশি করার জন্য) একদিন রোজা রাখে, আল্লাহ তাআলা তাঁকে জাহান্নামের আগুন থেকে ৭০ (সত্তর) বছরের রাস্তা পরিমাণ দূরবর্তী স্থানে রাখেন।' (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)

 سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، يُحَدِّثُنَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لِامْرَأَةٍ مِنَ الْأَنْصَارِ سَمَّاهَا ابْنُ عَبَّاسٍ فَنَسِيتُ اسْمَهَا مَا مَنَعَكِ أَنْ تَحُجِّي مَعَنَا؟ قَالَتْ: لَمْ يَكُنْ لَنَا إِلَّا نَاضِحَانِ فَحَجَّ أَبُو وَلَدِهَا وَابْنُهَا عَلَى نَاضِحٍ وَتَرَكَ لَنَا نَاضِحًا نَنْضِحُ عَلَيْهِ، قَالَ: فَإِذَا جَاءَ رَمَضَانُ فَاعْتَمِرِي، فَإِنَّ عُمْرَةً فِيهِ تَعْدِلُ حَجَّةً

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক আনসারী মহিলাকে বললেন, বর্ণনাকারী বলেন, তার নাম ইবনে আববাস রা. উল্লেখ করেছিলেন কিন্তু আমি তা ভুলে গিয়েছি-(অন্য বর্ণনায় তার নাম উম্মে সিনান উল্লেখ করা হয়েছে) তুমি কেন আমাদের সাথে হজ্ব করতে যাওনি? তিনি বললেন, আমাদের পানি বহনকারী দুটি মাত্র উট রয়েছে। একটিতে আমার ছেলের বাবা (স্বামী) ও তাঁর ছেলে হজ্ব করতে গিয়েছেন, অন্যটি পানি বহনের জন্য আমাদের কাছে রেখে গিয়েছেন। তিনি বলেন, রমযান মাস এলে তুমি উমরা করবে। কেননা এ মাসের উমরা একটি হজ্বের সমতুল্য। সহীহ মুসলিমের অন্য বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, রমযান মাসের উমরা একটি হজ্বের সমতুল্য। অথবা বলেছেন, আমার সাথে একটি হজ্বের সমতুল্য (সওয়াবের হিসাবে)। [সহীহ বুখারী,হাদীস নং-১৭৮২১৬৯০, সহীহ মুসলিম-১২৫৬]

 عن ابن عباس رضي الله عنهما قال: "كان رسول الله صلى الله عليه وسلم أجود الناس، وكان أجود ما يكون في رمضان حين يلقاه جبريل، وكان يلقاه في كل ليلة من رمضان فيدارسه القرآن، فلرسول الله صلى الله عليه وسلم أجود بالخير من الريح المرسلة" 

ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল ছিলেন। আর রমজান মাসে তা আরো বেড়ে যেত। এ সময় জিবরাইল (আ.) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। রমজানের প্রতি রাতে জিবরাইল (আ.) মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে দেখা করতেন এবং কোরআন তেলাওয়াত শোনাতেন। এ সময় রাসুল (সা.) প্রবহমান বাতাসের চেয়েও বেশি দান করতেন। [সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর : ৬, মুসলিম, হাদিস নম্বর : ২৩০৮]

 عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: « قال الله عز وجل: كل عمل ابن آدم له إلا الصيام، فإنه لي وأنا أجزي به، والصيام جنة، فإذا كان يوم صوم أحدكم، فلا يرفث يومئذ ولا يصخب، فإن سابه أحد أو قاتله، فليقل: إني امرؤ صائم، والذي نفس محمد بيده، لخلوف فم الصائم أطيب عند الله، يوم القيامة، من ريح المسك» 

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন , রোজা ছাড়া আদম সন্তানের প্রত্যেকটি কাজই তার নিজের জন্য। তবে রোজা আমার জন্য। আমি নিজেই এর পুরস্কার দেব। রোজা (জাহান্নামের আজাব থেকে বাঁচার জন্য) ঢাল স্বরুপ। তোমাদের কেউ রোজা রেখে অশ্লীল কথাবার্তায় ও ঝগড়া বিবাদে যেন লিপ্ত না হয়। কেউ তার সঙ্গে গালমন্দ বা ঝগড়া বিবাদ করলে শুধু বলবে, আমি রোজাদার। সেই মহান সত্তার কসম যার করতলগত মুহাম্মদের জীবন, আল্লাহর কাছে রোজাদারের মুখের গন্ধ কস্তুরীর সুঘ্রানের চেয়েও উওম। [বুখারী ও মুসলিম]

 عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «الصيام جُنة فلا يرفث ولا يجهل، وإن امرؤ قاتله أو شاتمه فليقل: إني صائم مرتين» 

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সিয়াম হল ঢাল। সুতরাং তোমাদের মাঝে যে সিয়াম পালন করবে সে যেন অশ্লীল আচরণ ও শোরগোল থেকে বিরত থাকে। যদি তার সাথে কেউ ঝগড়া বিবাদ কিংবা মারামারিতে লিপ্ত হতে চায় তবে তাকে বলে দেবে আমি সিয়াম পালনকারী। [বুখারী ও মুসলিম]

 عن أبي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: « رُب صائم ليس له من صيامه إلا الجوع، ورُب قائم ليس له من قيامه إلا السهر» 

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এমন অনেক রোজাদার আছেন, যাদের রোজা পালন উপবাস করা ছাড়া আর কিছুই নয়। আবার রাত জেগে ইবাদত করা এমন অনেক আবেদ আছেন, যাদের রাতজাগরণে কোনো ফল অর্জিত হয় না।’ [ইবনে মাজা]


আরোও পড়ুনঃ স্ত্রীর মুখের লালা গলায় চলে গেলে রোযার হুকুম কী?


 عن أبي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من لم يدع قول الزور والعمل به، فليس لله حاجة في أن يدع طعامه وشرابه» 

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি পাপ, মিথ্যা কথা, অন্যায় কাজ ও মূর্খতাসুলভ কাজ ত্যাগ করতে না পারবে তার পানাহার ত্যাগ করাতে আল্লহ তায়ালার কোনো প্রয়োজন নেই (বোখারি, ৫/২২৫১)।

 عن حفصة رضي الله عنها عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «من لم يُبيت الصيام قبل الفجر، فلا صيام له» 

হজরত হাফসা (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে-ব্যক্তি ফজরের পূর্বে রোজা রাখার নিয়ত না করে, তার রোজা রাখা পূর্ণ হয় না’ [তিরমিজি-আবওয়াবুস সাওম]

 عن عائشة رضي الله عنها قالت: "دخل عليَّ النبي صلى الله عليه وسلم ذات يوم فقال: «هل عندكم شيء؟» فقلنا: لا، قال: «فإني إذن صائم»، ثم أتانا يومًا آخر فقلنا: "يا رسول الله، أُهدي لنا حَيس"، فقال: « أرِينيه، فلقد أصبحت صائمًا»، فأكل"

আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত; তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা আমাদের কাছে এসে বললেনঃ তেমাদের কাছে কি কোন খাবার আছে? আমরা বললাম, না। তখন তিনি বললেন, তবে আমি এখন রোযাদার। তারপর আর একদিন তিনি আমাদের কাছে আসলেন, আমরা বললাম, আমাদের জন্য মালিদা উপহার দেয়া হয়েছে। তিনি বললেনঃ তা আমাকে দেখাও আমি কিন্তু রোযাদার রূপে সকাল করেছি, তারপর তিনি খাবার খেলেন। [সহীহ মুসলিম, বুলুগূল মারাম ৬৫৭]

 عن عائشة وأم سلمة رضي الله عنهما "أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يدركه الفجر وهو جنب من أهله ثم يغتسل ويصوم"

উম্মুল মোমিনীন আয়েশা রা. বর্ণিত হাদিস, রমজান মাসে স্বপ্নদোষ ব্যতীতই অপবিত্র অবস্থায় (অর্থাৎ স্ত্রী সহবাসের মাধ্যমে নাপাক অবস্থায়) রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজর হয়ে যেত। অত:পর তিনি গোসল করে রোজা রাখতেন।” [সহিহ বুখারি : ১৮২৯ ও মুসলিম : ১১০৯]

 عن أنس بن مالك رضي الله عنه قال: قال النبي صلى الله عليه وسلم: «تسحَّروا فإن في السحور بركة» 

হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- ‘তোমরা সাহরি খাও কারণ এতে বরকত রয়েছে।’ বোখারি ও মুসলিম)

 عن عمرو بن العاص رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «فصلُ ما بين صيامنا وصيام أهل الكتاب أكلةُ السَّحَر» 

হযরত আমর ইবনুল আস রাঃ থেকে বর্ণিত, রাসুল সাঃ বলেন, আমাদের ও আহলুল কিতাব (ইহুদী-খ্রিষ্টানদের) রোজার মাঝে পার্থক্য হল সহারি খাওয়া।’ [মুসলিম] 

 عن زيد بن ثابت رضي الله عنه قال: "تسحَّرنا مع النبي صلى الله عليه وسلم ثم قام إلى الصلاة، قلت: "كم كان بين الأذان والسحور؟" قال: «قدر خمسين آية»" 

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাহরি ও নামাজের মাঝে পঞ্চাশ আয়াত তেলাওয়াত পরিমাণ সময় অবশিষ্ট থাকতো। [বুখারী, ]

 عن ابن عمر رضي الله عنهما قال: "كان لرسول الله صلى الله عليه وسلم مؤذنان بلال وابن أم مكتوم الأعمى، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إن بلالًا يؤذِّن بليل، فكلوا واشربوا حتى يؤذِّن ابن أم مكتوم»، قال: ولم يكن بينهما إلا أن ينزل هذا ويرقى هذا"

আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুইজন মুয়াজ্জিন ছিল: বেলাল ও অন্ধ উম্মে মাকতুম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إن بلالاً يؤذِّن بليل فكلوا واشربوا حتى يؤذِّن ابنُ أمِّ مكتوم».

“বেলাল রাতে আযান দেয়। অতএব, তোমরা খাও-পান কর, যতক্ষণ না ইবন উম্মে মাকতুম আযান দেয়”। তিনি বলেন, তাদের দুইজনের আযানের মধ্যে কোনো ব্যবধান ছিল না, শুধু এতটুকু ছিল যে, একজন নামতেন আর অপরজন উঠতেন। [বুখারী, ]

 عن سهل بن سعد رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «لا يزال الناس بخير ما عجَّلوا الفطر» 

হযরত সাহল বিন সা’দ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘ততদিন যাবত আমার উম্মত কল্যাণের মাঝে থাকবে যতদিন আগেভাগে (সূর্য ডুবার সাথে সাথে) ইফতার করবে।’ [বুখারী,  ]

 عن عمر بن الخطاب رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إذا أقبل الليل من ها هنا، وأدبر النهار من ها هنا، وغربت الشمس، فقد أفطر الصائم»

উমর ইবনে খাত্তাব (রাঃ) তার পিতা উমর ইবনে খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে সময় এদিক (পূর্বদিক) থেকে অন্ধকার হয়ে আসছে বলে মনে হবে আর এদিক (পশ্চিম দিক) থেকে দিনের আলো তিরোহিত বা অদৃশ্য হবে এবং সূর্য অস্ত যাবে তখন রোযাদারের ইফতারের সময় হয়ে যায়। [সহীহ আল বুখারী, ২য় খণ্ড, কিতাবুস সাওম, পৃষ্ঠা: ২৪১, হাদীস: ১৮১৫, আধুনিক প্রকাশনী]


আরোও পড়ুনঃ হস্তমৈথুন বা মাস্টারবিউশন করলে কি রোযা ভেঙ্গে যায় ?


 عن أنس بن مالك رضي الله عنه قال: "كان النبي صلى الله عليه وسلم يفطر قبل أن يصلي على رُطَبات، فإن لم تكن رُطَبات فتُميرات، فإن لم تكن تميرات حسا حسوات من ماء"

হযরত আনাস রাঃ বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত আদায়ের পূর্বে কয়েকটি ভেজা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন, যদি ভেজা খেজুর না থাকত, তবে সাধারণ শুকনো খেজুরই গ্রহণ করতেন। যদি তাও না থাকত, তবে কয়েক ঢোক পানিই হত তার ইফতার। [ তিরমিযি, ]

 عن عائشة رضي الله عنها قالت: "كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يُقبِّل وهو صائم، ويُباشر وهو صائم، ولكنه أملكُكُم لأَرَبه"

আয়েশা রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সা. রোযা অবস্থায় (স্ত্রীকে) চুমু দিতেন এবং আলিঙ্গন করতেন। কিন্তু আপন (জৈবিক) চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন তোমাদের মধ্যে সবচে’ বেশি নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতার অধিকারী। [বুখারী ১৮৪১ মুসলিম ১১২১]

 عن أبي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من نسي وهو صائم فأكل أو شرب فليتمَّ صومه؛ فإنما أطعمه الله وسقاه» 

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে রোজা অবস্থায় ভুল করে কিছু খেয়েছে বা পান করেছে। ওই ব্যক্তি যেন তার রোজা পূর্ণ করে। কেননা আল্লাহই তাকে পান করিয়েছেন। [বুখারি, ]

 عن أبي هريرة رضي الله عنه أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «من ذَرَعه القيء فليس عليه قضاء، ومن استقاء عمدًا فليقضِ»

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,অনিচ্ছাকৃতভাবে কোনো ব্যক্তির বমি হলে তাকে সে রোজা কাজা করতে হবে না (অর্থাৎ তার রোজা ভাঙবে না)। আর যে ইচ্ছাকৃত বমি করবে, সে যেন রোজার কাজা করে। (তিরমিজি, হাদিস : ৭২০]

 عن لقيط بن صبرة رضي الله عنه قال: قلت: "يا رسول الله، أخبرني عن الوضوء، قال: « أسبغ الوضوء، وخلِّل بين الأصابع، وبالغ في الاستنشاق إلا أن تكون صائمًا»" 

 লাক্বীত বিন সাবুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বলেন,

وَبَالِغْ فِي الِاسْتِنْشَاقِ إِلَّا أَنْ تَكُونَ صَائِمًا

ছিয়াম অবস্থায় না থাকলে ওযুর ক্ষেত্রে নাকে অতিরিক্ত পানি নিবে। [আবু দাঊদ, অধ্যায়: নাক ঝাড়া, ১৪২। 

 عن جابر بن عبد الله رضي الله عنهما قال: "كان رسول الله صلى الله عليه وسلم في سفر فرأى رجلًا قد اجتمع الناس عليه، وقد ظلل عليه، فقال: « ما له؟» قالوا: رجل صائم، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ليس من البر أن تصوموا في السفر»" 

জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক সফরে ছিলেন, হঠাৎ তিনি লোকের জটলা এবং ছায়ার নিচে এক ব্যক্তিকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, এর কী হয়েছে? তারা বলল, সে রোজাদার। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,

لَيْسَ مِنَ الْبِرِّ الصِّياَمُ في السَّفَرِ “সফরে সওম পালনে কোন নেকির কাজ নয়।’’ [বুখারি, হাদিস নং ১৯৪৬]

 عن حمزة بن عمرو الأسلمي رضي الله عنه أنه قال: "يا رسول الله، أجد بي قوةً على الصيام في السفر، فهل عليَّ جناح؟" فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «هي رخصة من الله، فمن أخذ بها فحسن، ومن أحبَّ أن يصوم فلا جناح عليه»

হামযাহ্ ইবনে আমর আল আসলামি (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল, সফর অবস্থায় সিয়াম পালনের ক্ষমতা আমার রয়েছে। এ সময় সিয়াম পালন করলে আমার কোন গুনাহ হবে কি? তিনি বললেন, “এটা আল্লাহর পক্ষ হতে এক বিশেষ অবকাশ, যে তা গ্রহণ করবে, তা তার জন্য উত্তম। আর যদি কেউ সিয়াম পালন করতে চায়, তবে তার কোন গুনাহ হবে না।”

 [সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২৫১৯]

 عن انس رض قال:  "سافرنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم فيصوم الصائم، ويفطر المفطر، فلا يعيب بعضهم على بعض"

হযরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে সফরে ছিলাম। রোজাদার বে-রোজাদরকে এবং বে-রোজাদর রোজাদারকে কোনো প্রকার দোষারোপ করেন নাই। [মুসলিম, ]

 عن أنس رضي الله عنه قال: "كنا مع النبي صلى الله عليه وسلم في السفر، فمنا الصائم ومنا المفطر، قال: فنزلنا منزلًا في يوم حارٍّ، أكثرنا ظلًا صاحب الكساء، ومنا من يتقي الشمس بيده، قال: فسقط الصُوَّام، وقام المفطرون فضربوا الأبنيةَ وسقوا الرِّكاب، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ذهب المفطرون اليوم بالأجر»

আনাস রা. বলেন : আমরা (সে-সময়) রাসূল সা.-এর সঙ্গে ছিলাম, আমাদের মাঝে অধিক ছায়া গ্রহণকারী ছিল সে ব্যক্তি, যে তার কাপড় দিয়ে ছায়া নিচ্ছিল। যারা রোজাদার ছিল তারা কিছুই করল না,আর যারা পানাহার করেছিল,তারা বাহন হাঁকাল,কাজে আত্মনিয়োগ করল এবং প্রচুর পরিশ্রম করল। রাসূল বললেন : পানাহারকারীগণ আজ সওয়াব নিয়ে গেছে। (বোখারি,হাদিস ২৭৩৩)

 عن عائشة رضي الله عنها أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «من مات وعليه صيام صام عنه وليه»

হযরত আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.)বলেন, “যে ব্যক্তি এমন মৃত্যু বরণ করল এমন অবস্থায় যার উপর রোযা বাকি আছে তার ওলী তথা নিকটাত্মীয়গণ তার পক্ষ থেকে রোযা রাখবে।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)

আরো পড়ুনঃ ইফতারের সহীহ দোয়া ও মতিউর রহমানের মিথ্যাচার


 عن زيد بن خالد الجهني رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من فطَّر صائمًا كان له مثلُ أجرِه غيرَ أنه لا ينقص من أجر الصائم شيئًا»

যায়েদ ইবনে খালেদ আল-জুহানি (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি কোন রোজাদারকে ইফতার করাবে সে রোজাদারের সম পরিমাণ সওয়াব পাবে; রোজাদারের সওয়াব থেকে একটুও কমানো হবে না।”[সুনানে তিরমিযি (৮০৭), সুনানে ইবনে মাজাহ১৭৪৬]

  عن عبد الله بن عمرو أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «الصيام والقرآن يشفعان للعبد يوم القيامة، يقول الصيام: أي رب، منعته الطعام والشهوات بالنهار فشفِّعني فيه، ويقول القرآن: منعته النوم بالليل فشفعني فيه، قال: فيُشفَّعان»

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাঃ থেকে রাসুল (সা.) বলেন, ‘রোজা ও কোরআন মানুষের জন্য কেয়ামতের দিন সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, ‘হে আমার রব, আমি তাকে খাবার ও প্রবৃত্তি পূরণে বাধা দিয়েছি। তাঁর ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল করুন। আর কোরআন বলবে, আমি তাঁকে রাতের বেলা ঘুমাতে বাধা দিয়েছি। অতএব, তাঁর ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। অতঃপর উভয়ের সুপারিশ গ্রহণ করা হবে।’ [মুসনাদে আহমদ, হাদিস নম্বর : ৬৫৮৯]

 عن عائشة رضي الله عنها قالت: "كان النبي صلى الله عليه وسلم إذا دخل العشر شدَّ مئزره وأحيا ليله، وأيقظ أهله

হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যখন রমজানের শেষ ১০ রাত আসত, তখন নবী করিম (সা.) কোমরে কাপড় বেঁধে নেমে পড়তেন (বেশি বেশি ইবাদতের প্রস্তুতি নিতেন) এবং রাত জেগে থাকতেন। আর পরিবার-পরিজনকেও তিনি জাগিয়ে দিতেন।’ [বুখারি শরিফ, হাদিস : ১০৫৩]

 عن عائشة رضي الله عنها قالت: "كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يجتهد في العشر الأواخر ما لا يجتهد في غيره

হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) শেষ দশকে ইবাদতের মাত্রা এত বেশি বাড়িয়ে দিতেন—যেমনটি অন্য সময় করতেন না। (আস সুনানুল কুবরা,   হাদিস : ৮৩৫১; মুসলিম, হাদিস : ১১৭৫)

 عن عائشة رضي الله عنها قالت: "كان النبي صلى الله عليه وسلم يعتكف في العشر الأواخر من رمضان"

হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,  নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ দশদিন ইতিকাফ করতেন। 

 عن ابن عباس رضي الله عنهما أن النبي صلى الله عليه وسلم قال في ليلة القدر: «التمسوها في العشر الأواخر من رمضان» 

রমজানের শেষ দশ দিনে তোমরা লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কর।” [বোখারি : ২০২০]

 عن عائشة رضي الله عنها قالت: "قلت: يا رسول الله، أرأيتَ إن علمتُ أي ليلةٍ ليلةُ القدر ما أقول فيها؟" قال: «قولي: اللهم إنك عفو تحب العفو فاعف عني» 

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, একবার আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম- হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি বলে দিন, আমি যদি লাইলাতুল কদর কোন রাতে হবে তা জানতে পারি, তাতে আমি কী (দোয়া) পড়বো? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি বলবে- اللَّهُمَّ إِنَّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي

উচ্চারণ : 'আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন; তুহিব্বুল আফওয়া; ফাফু আন্নি।’ অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন। [মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ]

 عن ابن عمر رضي الله عنهما قال: "فرض رسول الله صلى الله عليه وسلم زكاة الفطر من رمضان على الناس، صاعًا من تمر، أو صاعًا من شعير، على كل حر أو عبد، ذكر أو أنثى، من المسلمين" 

ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, ‘আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) মুসলিমদের সবাধীন ও ক্রীতদাস, পুরুষ ও নারী এবং ছোট ও বড় সকলের জন্য এক সা’ (প্রায় আড়াই কেজি) খেজুর বা যব খাদ্য (আদায়) ফরয করেছেন।’ [(বুখারী ১৫০৩, মুসলিম ৯৮৪নং)]

 عن أبي أيوب الأنصاري رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «من صام رمضان ثم أتبعه ستا من شوال كان كصيام الدهر» 

হজরত আবু আইয়ুব আনসারি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে রোজা রাখল এবং শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা পালন করল; সে যেন পুরো এক বছর রোজা পালন করল।’[মুসলিম]

 عن أبي قتادة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «ثلاث من كل شهر، ورمضان إلى رمضان، هذا صيام الدهر كله» 

হযরত আবু কাতাদাহ রাঃ থেকে বর্ণিত, রাসুল সঃ বলেছেন, প্রত্যেক মাসে তিনটি রোজাও এক রমজানের পর পরবর্তী রমজানে রোজা পালন পূর্ণ বছর রোজা পালনের সমান। [মুসলিম]

[লেখকঃ মুফতি রেজাউল করিম, মুহাদ্দীস, সুফফাহ মাদরাসা, মহেশপুর, ঝিনাইদহ, মোবাইলঃ 01782-409169]

সত্য প্রকাশ

আমার নামঃ মুফতি রেজাউল করিম। আমি একটি কওমী মাদরাসায় শিক্ষকতা করছি। পাশাপাশি এ ব্লগের সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। অনলাইন সম্পর্কে মোটামুটি জ্ঞান থাকায় সময় পেলে দ্বীন ইসলাম নিয়ে কিছু লেখার চেষ্টা করি। যেন অনলাইনেও মানুষ ইসলামি জ্ঞান অর্জন করতে পারে। আপনিও চাইলে এ ব্লগে লিখতে পারেন। মোবাইলঃ 01782-40 91 69

Please Select Embedded Mode For Blogger Comments

নবীনতর পূর্বতন