মুফতি রেজাউল করিম |
স্বপ্নদোষ হওয়া মানুষের ইচ্ছাধীন নয় ৷ এটা সম্পূর্ণ মানুষের ইচ্ছার বাইরে ৷ তাই রোযা অবস্থায় যদি কেউ দিনের বেলায় ঘুমায় এবং স্বপ্নদোষ হয় তাহলে রোযা ভাঙ্গবে না ৷
হাদীসে এসেছে, হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
ثَلاَثٌ لاَ يُفْطِرْنَ الصَّائِمَ: الحِجَامَةُ، وَالقَيْءُ، وَالاِحْتِلاَمُ
অর্থাৎ তিনটি জিনিস রোজা ভঙ্গের কারণ নয়- বমি, শিঙ্গা লাগানো ও স্বপ্নদোষ।
[সুনানে কুবরা, বাইহাকী ৪/২৬৪ ]
ইমাম নববী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ‘আল-মাজমু’ কিতাবে বলেন,
আলেমগণের ইজমা হলো, কারো স্বপ্নদোষ হলে রোযা ভাঙ্গবে না। কারণ সে ব্যক্তি এক্ষেত্রে অপারগ। যেমন: কারো অনিচ্ছা সত্ত্বেও কোন একটি মাছি যদি উড়ে এসে কারো পেটে ঢুকে যায় ।
এ মাসয়ালার দলিলের ক্ষেত্রে এটাই হচ্ছে ভিত্তি। পক্ষান্তরে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত, "যে ব্যক্তি বমি করেছে, কিংবা যার স্বপ্নদোষ হয়েছে, কিংবা যে শিঙ্গা লাগিয়েছে তার রোযা ভাঙ্গবে না" হাদিসটি দুর্বল যা দলিল পেশ করার উপযুক্ত নয়।
কুয়েতের موسوعة الفقهية তে উল্লেখ করা হয়েছে, যদি রমযান মাসে দিনে সহবাস ছাড়া বীর্য নির্গত হয় ৷ সেটা যদি হয় স্বপ্নদোষের কারণে তাহলে সকলের ঐক্যমতে রোযা নষ্ট হবে না ৷ কারণ নবী করিম আলাইহিস সালাম বলেছেন,
ثلاث لا يفطرن الصائم : الحجامة , والقيء والاحتلام
অর্থাৎ তিনটি জিনিস রোজা ভঙ্গের কারণ নয়- বমি, শিঙ্গা লাগানো ও স্বপ্নদোষ।
হ্যা তবে যদি ইচ্ছাকৃতভাবে স্ত্রীর সাথে আলিঙ্গন করে অথবা চুমু দেয় বা উত্তেজনার সাথে স্পর্শ করে বা হস্তমৈথুন করে আর এতে বীর্য বের হয় তাহলে রোযা ভেঙ্গে যাবে ৷
শাইখ উছাইমীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি কে ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল রমযানের দিনের বেলায় যার স্বপ্নদোষ হয়েছে?
জবাবে তিনি বলেন, "তার রোযা সহিহ। স্বপ্নদোষের কারণে রোযা ভাঙ্গবে না। কেননা স্বপ্নদোষ তার এখতিয়ারে নেই। ঘুমন্ত অবস্থায় কলম তুলে রাখা হয়।"
বীর্য বের হওয়া ব্যতিত স্বপ্নদোষ হলে গোসলের প্রয়োজন নেই ৷
যে ব্যক্তির স্বপ্নদোষ হয়েছে এরপর ঘুম থেকে জাগার পর সে বীর্যের কোন আলামত তার কাপড়ে দেখতে পায়নি তার উপর গোসল আবশ্যক হবে না।
ইবনে কুদামা ‘আল-মুগনি’ গ্রন্থে বলেন,
যে ব্যক্তির স্বপ্নদোষ হওয়াটা সে জেনেছে, কিন্তু (পোশাকে) বীর্য পায়নি তার উপরে গোসল ফরয নয়।
ইবনুল মুনযির বলেন, যত জন আলেমের অভিমত আমার মুখস্ত আছে তারা সকলে এই মতের উপর ইজমা করেছেন।
উম্মে সালামা রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বর্ণনা করেন যে, উম্মে সুলাইম রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বললেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ্! কোন মহিলার যদি স্বপ্নদোষ হয় তাহলে কি তার উপর গোসল ফরয হবে? তিনি বললেন: হ্যাঁ; যদি পানি (বীর্য) দেখে।
[সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম]
এ হাদিস নির্দেশ করছে যে, যদি পানি (বীর্য) না দেখে তাহলে তার উপর গোসল ফরয নয়।
[প্রিয় পাঠক! আপনিও এ ব্লগে লিখতে পারেন ৷ লেখার বিষয় হতে পারে, ইসলামি আর্টিকেল, জীবনাচার, গল্পগুচ্ছ, মাসয়ালা, ইত্যাদি ৷ আপনার লেখা ছবিসহ আপনার নামে ছাপা হবে ৷ লেখা পাঠাতে হবে এই মেইলে
rezua1995@gmail.com ]