ইতিকাফে বসলে কি গোসল করা যায় না?

ইতিকাফ রত অবস্থায় সাধারণ গোসল করার বিধান


বিষয়ঃ ইতিকাফ রত অবস্থায় সাধারণ গোসল করার বিধান।
আস সালামু আলাইকুম। জনাব, আমি এ বছর রমযানের শেষ দশকে তিকাফে বসি, এবং ইতিকাফ অবস্থায় অসস্থিভাব দূর করার জন্য মসজিদের বাহিরে গিয়ে গোসল করি । এখন আমার জানার বিষয় হলো, তিকাফ রত অবস্থায় সাধারণ গোসল করার জন্য মসজিদের বাহিরে বের হওয়া জায়েয আছে কি না ?
                                                  উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 بسم الله الرحمن الرحيم

ইতিকাফ অবস্থায় আবশ্যকীয় প্রয়োজন ছাড়া মসজিদ থেকে বের হলেই ইতিকাফ বিনষ্ট হয়ে যাবে । আবশ্যকীয় প্রয়োজনের অন্তর্ভূক্ত হল, ফরজ গোসল, পেশাব পায়খানায় গমণ এবং বাড়ি থেকে খানা আনার মানুষ না থাকলে বাসায় গিয়ে খানা খেয়ে আসা বা খানা নিয়ে আসা। এক্ষেত্রে রাস্তায় দেরী করা যাবে না। বাসায় গিয়ে বসে খানা খাওয়া ছাড়া অহেতুক বসে থাকা যাবে না। সুতরাং ফরজ গোসল ছাড়া সাধারণ গোসলের জন্যও ইতিকাফ অবস্থায় বের হওয়া নিষেধ।
 
أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا – زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – قَالَتْ: وَإِنْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ  لَيُدْخِلُ عَلَيَّ رَأْسَهُ وَهُوَ فِي المَسْجِدِ، فَأُرَجِّلُهُ، وَكَانَ لاَ يَدْخُلُ البَيْتَ إِلَّا لِحَاجَةٍ إِذَا كَانَ مُعْتَكِفًا
অর্থাৎ আম্মাজান আয়শা রাঃ বলেন, রাসূল সাঃ মসজিদে থাকা অবস্থায় আমার দিকে মাথা বাড়িয়ে দিতেন আর আমি তা আঁচড়িয়ে দিতাম এবং তিনি যখন ইতিকাফে থাকতেন, তখন [প্রাকৃতিক] প্রয়োজন ছাড়া ঘরে প্রবেশ করতেন না।[বুখারী, হাদীস নং-২০২৯, ১৯২৫, ১৯০২]

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সাধারণ গোসলের জন্য মসজিদ থেকে বের হওয়ার কারণে আপনার সুন্নত ইতিকাফ নষ্ট হয়ে গেছে। যেদিন গোসলের জন্য বের হয়েছে ঐ দিনের ইতিকাফ কাযা করে নেওয়া জরুরি। আর এই ইতিকাফটি নফল ইতিকাফ হিসাবে গন্য হবে।

[মারাকিল ফালাহ ৩৮৩; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২২৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১২,হেদায়া ১/২৩০, আদ্দুররুল মুখতার মাআ রদ্দিল মুহতার ৩/৪৩৪, বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৯, ফতোয়ায় দারুল উলুম ৬/৫০৪ কেফায়াতুল মুফতি ৪/২৪৬, ফতোয়ায় উসমানী ২/১৯৫, ফতোয়য় রহীমিয় ৭/২৭৬

হ্যাঁ, মুফতীয়ানে কেরাম একটি সূরত বলেছেন, সেটি হল এই যে, গোসল খানায় আগে থেকে কাউকে দিয়ে পানি ভরে রাখবে, তারপর ইস্তিঞ্জার জন্য বের হবে, ইস্তিঞ্জা শেষ করে অজু করার সময় দ্রুত গায়ে কিছু পানি ঢেলে চলে আসবে। এতে করে ইতিকাফ ভাঙ্গবে না। তবে গোসল করতে গিয়ে দেরী করবে না।



সত্য প্রকাশ

আমার নামঃ মুফতি রেজাউল করিম। আমি একটি কওমী মাদরাসায় শিক্ষকতা করছি। পাশাপাশি এ ব্লগের সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। অনলাইন সম্পর্কে মোটামুটি জ্ঞান থাকায় সময় পেলে দ্বীন ইসলাম নিয়ে কিছু লেখার চেষ্টা করি। যেন অনলাইনেও মানুষ ইসলামি জ্ঞান অর্জন করতে পারে। আপনিও চাইলে এ ব্লগে লিখতে পারেন। মোবাইলঃ 01782-40 91 69

Please Select Embedded Mode For Blogger Comments

নবীনতর পূর্বতন