ইমাম আহমাদ বিন হাম্মল রহমাতুল্লাহি আলাইহির পুত্র আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি ( ওফাত-২৯০ হি.) বর্ণনা করেন,
حدثني ابي قال حدثنا مومل قال سمعت سفيان الثوري قال: استتيب ابو حنيفة مرتين
অর্থাৎ সুফিয়ান ছাওরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি কে দুই বার কুফরী হতে তাওবা করানো হয়েছিল।
حدثني ابي قال حدثنا مومل قال سمعت سفيان الثوري قال: استتيب ابو حنيفة مرتين
অর্থাৎ সুফিয়ান ছাওরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি কে দুই বার কুফরী হতে তাওবা করানো হয়েছিল।
(Avj Bjvj Iqvj
gv‡idvwZi wiRvj wj Avngv`, Avãyjøvni eY©bv,µwgK bs -3587-3588, Avh hyqvdvDm
mMxi,µwgK bs,388)
তিনি আরো বর্ণনা করেন,
حدثني ابي قال سمعت سفيان بن عيينة يقول: استتيب ابو حنيفة مرتين
অর্থাৎ সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি কে দুই বার কুফরী হতে তাওবা করানো হয়েছিল।(Avj Bjvj Iqvj gv‡idvwZi wiRvj wj Avngv`, Avãyjøvni eY©bv,µwgK bs -3587-3588, Avh hyqvdvDm mMxi,µwgK bs,388)
উল্লিখিত অবাস্তব অভিযোগের উত্তর
ইমাম বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তার “যুয়াফাউস সগীরে” যে বর্ণনাটি এনেছেন ,সনদসহ সেটি হলো,
حدثنانعيم بن حماد ثنا يحيي بن سعيد ومعاذ بن معاذ سمعنا الثوري يقول: استتيب ابو حنيفة من الكفر مرتين
এ সনদের প্রথম রাবী (বর্ণনাকারী) যয়ীফ ও মুনকার (দুর্বল ও পরিত্যজ্য)। অনেকে তো বলেছেন এ সনদটি সহীহ তো নয়ই বরং যয়ীফ এর নিম্ন স্তরের। এটি একটি মুনকার বর্ণনা। নুয়াঈম বিন হাম্মাদ রহ. (মৃত্যু ২২৮ হি.) যার থেকে ইমাম বুখারী রহ. বর্ণনা করেছেন।
এই নুয়াঈম রহ. আহলুস সুন্নাহর অনুসারী হলেও হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে তিনি যঈফ বা দুর্বল। তিনি মুনকার রেওয়ায়াত বর্ণনা করেন। কোনো কোনো মুহাদ্দিস তাকে হাদীস জাল করার অভিযোগেও অভিযুক্ত করেছেন।
এই নুআঈমের ব্যাপারে প্রশিদ্ধ সালাফী আলেম শায়খ সালেহ আল মুনাজ্জিদ রহ.(যিনি বিন বায ও শায়খ উসাইমিন রাহিমাহুমাল্লাহ এর উস্তাদ) বলেন,
এই নুআঈমের ব্যাপারে প্রশিদ্ধ সালাফী আলেম শায়খ সালেহ আল মুনাজ্জিদ রহ.(যিনি বিন বায ও শায়খ উসাইমিন রাহিমাহুমাল্লাহ এর উস্তাদ) বলেন,
ونعيم بن حماد كان من علماء اهل السنة الا انه كان ضعيفا في الحديث يروي المناكير ومن ثم وهاه اهل العلم وتركوا حديثه ولم يحتجوا به
অর্থাৎ ন্আুঈম বিন হাম্মাদ আহলুস সুন্নাহর একজন আলেম ছিলেন, তবে তিনি হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে ছিলেন দুর্বল। তিনি মুনকার রেওয়ায়ায়েত বর্ণনা করতেন। তাকে আহলুল ইলমগণ জাল করার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন। তার বর্ণনাকৃত হাদীস তরক করেছেন (পরিত্যাগ করেছেন)। তার বর্ণনাগুলো দ্বারা হুজ্জত (দলীল) পেশ করেননি।
নুআঈমের ব্যাপারে ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
ليس في الحديث بشيئ ولكنه صاحب سنة
অর্থাৎ হাদীসের ক্ষেত্রে তার কিছুই নেই । তবে সে সুন্নাহর অনুসারী।
( ZvnwheyZ
Zvnwhe,ivex 831)
وقال غيره كان يضع الحديث في تقوية السنة وحكايات في ثلب ابي حنيفة كلها كذب
অর্থাৎ তিনি অন্যত্র বলেছেন, সে তার কিতাব “ তাকবিয়াতুস সুন্নাহ”য় হাদীস জাল করেছেন। আর ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর মানহানি করে যত বর্ণনা করেছেন, সব মিথ্যা।( ZvnwheyZ Zvnwhe, 10g LÛ, c„, 462, ivex, 831)
হাফেয আবুল ফাতহ আল আযদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
قالوا كان يضع الحديث في تقوية السنة وحكايات مزورة في ثلب ابي حنيفة كلها كذب
অর্থাৎ উলামায়ে কেরাম বলেছেন, নুয়াইম ইবনে হাম্মাদ তার “তাকবিয়াতুস সুন্নাহ”য় হাদীস জাল করেছেন এবং আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর ব্যাপারে যে সব মনগড়া কথা বলে মানহানির কাহিনি বর্ণনা করেছেন, সেসব কাহিনি সব মিথ্যা।( ZvnwheyZ Zvnwhe-10g LÐ, c„.463,ivex 831)
নুআঈম ইবনে হাম্মাদের ব্যাপারে ইমাম দারারকুতনী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
امام في السنة كثير الوهم
অর্থাৎ তিনি আহলুস সুন্নাহর ইমাম ছিলেন কিন্তু হাদীসের ক্ষেত্রে অনেক ভ্রান্তের স্বীকার হতেন।
ইমাম নাসাঈ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
ليس بثقة
অর্থাৎ সে নির্ভরযোগ্য নয়।
আবু আলী নিসাপুরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
سمعت النسائي يذكر فضل نعيم بن حماد وتقدمه في العلم والمعرفة والسنن ثم قيل له في قبول حديثه فقال: قد كثر تفرده عن الائمة المعروفين باحاديث كثيرة فصار في حد من لا يحتج به
অর্থাৎ আবু আলী নিসাপুরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি ইমাম নাসাঈকে নুআঈমের জ্ঞানের প্রশংসা করতে শুনেছি। তারপর যখন তাকে নুয়াঈমের বর্ণনাকৃত হাদীসের গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলো , তখন তিনি বললেন, প্রশিদ্ধ ইমামদের থেকে অনেক হাদীস তার একাকী বর্ণনা রয়েছে। সে এক্ষেত্রে সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। তাই তার থেকে বর্ণনাগুলা গ্রহণযোগ্য নয়।(ZvnwheyZ Zvnwhe,10/461)
একটি প্রশ্ন ও তার উত্তর
অনেক মুহাদ্দিস নুয়াঈমকে হাদীসের ক্ষেত্রে ছিকা বলেছেন। আবার অনেকে দুর্বল বলেছেন। এর সমাধান কী হবে, তাদিল কী হবে?
হাফেয ইবনে রজব রহমাতুল্লাহি আলাইহি সুন্দর ভাবে এর উত্তর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন,
ونعيم هذا وان كان وثقه جماعة من الائمة فان ائمة الحديث كانوا يحسنون به الظن لصلابته في السنة وتشدده في الرد علي اهل الاهواء وكان ينسبونه الي انه يهم ويشيبه عليه في بعض الاحاديث فلما كثر عثورهم علي مناكيره حكموا عليه بالضعف
অর্থাৎ নুআঈমের ব্যাপারে ইমামদের অনেকেই রির্ভযোগ্য হওয়ার রায় দিয়েছেন। তার কারণ হলো, হাদীসের ইমামগণ তার ব্যাপাওে ভালো ধারনা করে তাকে হাদীসের ক্ষেত্রে এমনটি বলে ফেলেছেন। কারণ তিনি সুন্নাহর অনুসারী ছিলেন। সেই সাথে সে বাতিল ফিরকার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।এ কারণে তারা ধারনা করে তাকে ছিকা বলেছেন। আবার কিছু সঠিক বর্ণনা পেয়েছেন। কিন্তু যখন তার মুনকার বর্ণনাগুলোর ভান্ডার প্রকাশিত হলো, তখন তার ব্যাপারে যয়ীফের হুকুম দিয়ে দিলেন।(Rv‡gDj Djyg Iqvj wnKvg2/394)
হাফেয ইবনে রজব রহমাতুল্লাহি আলাইহি সুন্দর ভাবে এর উত্তর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন,
ونعيم هذا وان كان وثقه جماعة من الائمة فان ائمة الحديث كانوا يحسنون به الظن لصلابته في السنة وتشدده في الرد علي اهل الاهواء وكان ينسبونه الي انه يهم ويشيبه عليه في بعض الاحاديث فلما كثر عثورهم علي مناكيره حكموا عليه بالضعف
অর্থাৎ নুআঈমের ব্যাপারে ইমামদের অনেকেই রির্ভযোগ্য হওয়ার রায় দিয়েছেন। তার কারণ হলো, হাদীসের ইমামগণ তার ব্যাপাওে ভালো ধারনা করে তাকে হাদীসের ক্ষেত্রে এমনটি বলে ফেলেছেন। কারণ তিনি সুন্নাহর অনুসারী ছিলেন। সেই সাথে সে বাতিল ফিরকার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।এ কারণে তারা ধারনা করে তাকে ছিকা বলেছেন। আবার কিছু সঠিক বর্ণনা পেয়েছেন। কিন্তু যখন তার মুনকার বর্ণনাগুলোর ভান্ডার প্রকাশিত হলো, তখন তার ব্যাপারে যয়ীফের হুকুম দিয়ে দিলেন।(Rv‡gDj Djyg Iqvj wnKvg2/394)
দ্বিতীয় রাবীর অবস্থা
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর “ আল ইলাল ওয়াল মারেফাতির রিজাল” যেটি তার পুত্র ইমাম আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেছেন। সে কিতাবের ৩৫৮৭ নম্বরে বর্ণনা যেটি সুফিয়ান সাওরি রহমাতুল্লাহি আলাইহি হতে একই কথা এসেছে। এর সনদে রয়েছে মুয়াম্মাল ইবনে ঈসমাঈল রহমাতুল্লাহি আলাইহি । যিনি ইমাম সুফিয়ান সাওরি রহমাতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণনা করেছেন। মুয়াম্মাল বিন ঈসমাঈলও যয়ীফ রাবী। সে বেশী বেশেী ভুল করতেন। মুয়াম্মাল বিন ঈসমাঈল সম্পর্কে ইমাম বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
مومل بن اسماعيل العدوي مولي ال الخطاب وقيل مولي بني بكر ابو عبد الرحمن البصري نزيل مكة وقال البخاري منكر الحديث
অর্থাৎ মুয়াম্মাল বিন ঈসমাঈল আল আদাবী আলুল খিতাবের মাওলা ছিলেন। কারো কারো মতে বনু বকরের মাওলা ছিলেন। তিনি মক্কায় আগত। ইমাম বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, তিনি ছিলেন মুনকারুল হাদীস।(ZvnwheyZ Zvnwhe,ivex bs 681)
مومل بن اسماعيل العدوي مولي ال الخطاب وقيل مولي بني بكر ابو عبد الرحمن البصري نزيل مكة وقال البخاري منكر الحديث
অর্থাৎ মুয়াম্মাল বিন ঈসমাঈল আল আদাবী আলুল খিতাবের মাওলা ছিলেন। কারো কারো মতে বনু বকরের মাওলা ছিলেন। তিনি মক্কায় আগত। ইমাম বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, তিনি ছিলেন মুনকারুল হাদীস।(ZvnwheyZ Zvnwhe,ivex bs 681)
ان البخاري قال : كل من قلت فيه منكر الحديث فلا تحل الرواية عنه
অর্থাৎ নিশ্চয় ইমাম বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, যে ব্যক্তির ক্ষেত্রে আমি ‘মুনকারুল হাদীস’ বলি তার থেকে বর্ণনা করা যায়েয নেই।( wghvbyj BwZ`vj, 1/6)
আল্লামা খতীব বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, তিনি প্রচুর ভুল করতেন।(Zvix‡L evM`v`, 1/6)
ইমাম আবু হাতেম রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, তিনি প্রচুর ভুল করতেন।( Avj Rviû IqvZ Zv`xj,eY©bv bs 1709)
ইমাম যাহাবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, তিনি প্রচুর ভুল করতেন।( Avj Kvkkvd,eY©bv bs,5747)
তা ছাড়া সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা রহমাতুল্লাহি আলাইহি আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর সম্পর্কে এ কথা বলতেই পারে না। কারণ, সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা রহমাতুল্লাহি আলাইহি আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর প্রশংসা করে বলেন,
اول من صيرني محدثا ابو حنيفة
অর্থাৎ আমাকে সর্বপ্রথম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি মুহাদ্দিস বানিয়েছে ।(IdvqZzj
AvÔBqvb , 328)
তেমনি ভাবে সুফিয়ান সাওরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে এমন মিথ্যাচার করতে পারে না। দেখুন তিনি আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর প্রশংসায় কী বলেন,
“ আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে ইলম অন্বেষণ করেছেন। তিনি ছিলেন দ্বীনের সীমানা রক্ষাকারী, যাতে আল্লাহর হারামকৃত কোনো বিষয়কে হালাল মনে করা না হয়, কিংবা হালালের মত তাতে লিপ্ত থাকা না হয়। যে হাদীসগুলো তার কাছে সহীহ সাব্যস্ত হতো তার উপর তিনি আমল করতেন। এবং সর্ববিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শেষ আমলকে গ্রহণ করতেন। কুফার আলিমগণকে যে আমল ও ধারার উপর প্রতিষ্ঠিত দেখেছেন তিনিও তা থেকে বিচ্যুত হননি”।(Avj Bb‡ZKv, Be‡b Avew`j evi,262)