মুফতি মুহাম্মাদ ওয়াক্কাস ৷ আদর্শ শিক্ষক, শাইখুল হাদিস, রাজনীতিবিদ, আধ্যাত্মিক রাহবার। ইসলাম, ধর্ম ও জাতীয় বিভিন্ন ইস্যুতে ছিলেন প্রতিবাদী কণ্ঠ। তিনি জীবদ্দশায় এক বর্ণাঢ্য ইতিহাস রচনা করে গেছেন। তাকে নিয়ে আজকের এ আয়োজন-
মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস ৷ জন্ম: ১৫ জানুয়ারি ১৯৫২ ৷ বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ ও ইসলামী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি যশোর-৫ আসনের সাবেক সাংসদ, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের একাংশের সভাপতি ও আল হাইআতুল উলয়ার সহ-সভাপতি ছিলেন।
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন
মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস ১৫ জানুয়ারি ১৯৫২ সালে যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার বিজয়রামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ইসমাইল ও মাতা নূর জাহান বেগম। আলিয়া মাদরাসা থেকে দাখিল, আলিম, ফাযিল এবং কওমী থেকে দাওরায়ে হাদীস পাশ করেন। ১৯৭৬ সালে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে ‘মুফতি’ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি যশোর মাদানী নগর মাদ্রাসার প্রতিষ্টাতা প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার ৩ ছেলে ও ৪ মেয়ে।
রাজনৈতিক ও কর্মজীবন
মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস বাংলাদেশ তথা ভারত উপমহাদেশের সবচেয়ে পুরানো ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতা। তিনি ১৯৮৬, ১৯৮৮, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন। তন্মধ্যে ১৯৮৬, ১৯৮৮ ও ২০০১ সালে যশোর-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মুহাম্মদ ওয়াক্কাস তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সর্বপ্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর পর যোগ দেন জাতীয় পার্টিতে এবং চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচননে জাতীয় পার্টির সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের হয়ে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় ঐক্যজোট থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৯১ সাল থেকে ২০১৫ সালের ৭ নভেম্বর পর্যন্ত জমিয়তে উলামায়ে ইসলমে বাংলাদেশের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর পর নির্বাহী সভাপতি। ২০১৭ সালে জমিয়ত বিভক্ত হলে তিনি একাংশের সভাপতি নির্বাচিত হন।
ইন্তেকাল
আজ বুধবার ৩১ মার্চ ভোর ৪.৩০মিনিটে রাজধানী ঢাকার মহাখালী শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন তিনি।
শুরু হয়েছে তাঁর অনন্তকালের সফর। এই সফরে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন তাঁর একান্ত সাহায্যকারী হোন। কবর থেকে শুরু করে পরবর্তী প্রত্যেকটি মঞ্জিলকে তাঁর জন্য সহজ, আরামদায়ক ও শান্তিময় করে দিন। ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতের উচ্চ মাকাম আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাঁকে দান করুন। আমীন।
তাঁর ইন্তিকালে শোক-সন্তপ্ত পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাদেরকে এ শোকে সবরে জামিল দান করুন। আমীন